২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দেশের সিএমএসএমই খাতের উন্নয়নে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে এসএমই ফাউন্ডেশনের দেওয়া ১৪০টি প্রস্তাবের মধ্যে ৪১টি প্রস্তাব গৃহীত হওয়ায় সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে এসএমই ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশন বলছে, এর ফলে দেশে এসএমই খাতের প্রসারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি হবে।
Advertisement
এসএমই ফাউন্ডেশন জানায়, অর্থ উপদেষ্টার বাজেটে সিএমএসএমই খাতের ১০ হাজার উদ্যোক্তাকে এক হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণের ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া আগামী তিন বছরে ১৫ হাজার উদ্যোক্তা তৈরি, ২৫ হাজার উদ্যোক্তাকে দক্ষতামূলক ও কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদান, বিভাগীয় শহরে এসএমই ডিসপ্লে ও সেলস সেন্টার স্থাপন, জেলা শহরে আঞ্চলিক এসএমই পণ্যমেলা আয়োজন, সিএমএসএমই উদ্যোক্তাদের কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ প্রতিষ্ঠাসহ উল্লেখযোগ্য কিছু কর্মসূচি বাস্তবায়নের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে, যা ইতোমধ্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের কর্মপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এসএমই ফাউন্ডেশন আশা করে, এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ প্রয়োজন। পাশাপাশি বাজেটে এসএমই নীতিমালা ২০২৫ বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট বরাদ্দ ও সিএমএসএমই খাতের ১০ হাজার উদ্যোক্তার জন্য ঘোষিত এক হাজার কোটি টাকার ঋণ এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিতরণ করা যেতে পারে।
এছাড়া বাজেট বক্তৃতায় এসএমই খাতের উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশনের চলমান ক্রেডিট হোলসেলিং কর্মসূচির আওতায় স্বল্পসুদে ঋণ প্রদান, দেশব্যাপী এসএমই ক্লাস্টার ম্যাপিং হালনাগাদকরণ ও চাহিদা নিরূপণ, ইনকিউবেশন সেন্টারে সেবা প্রদান, এসএমই পণ্যমেলা আয়োজনসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করায় কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে এসএমই ফাউন্ডেশন।
Advertisement
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য এসএমই ফাউন্ডেশন থেকে সামগ্রিক এসএমই খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৪০টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়, যার মধ্য থেকে ৪১টি প্রস্তাব পূর্ণাঙ্গ বা আংশিকভাবে গৃহীত হয়েছে যা ‘অর্থ অধ্যাদেশ ২০২৫’ এবং বিভিন্ন এসআরও বা আদেশের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছে।
গৃহীত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো
১. বর্তমানে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স এক লাখ টাকা পর্যন্ত হলে আবগারী শুল্ক অব্যাহতি দেওয়া আছে, এই সীমা বাড়িয়ে এসএমইদের জন্য ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে এই সীমা বাড়িয়ে এসএমইদের জন্য তিন লাখ টাকা করা হয়েছে।
২. প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে ধান, ডাল, বাদাম, আলু, টমেটো, তরল দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, পেঁয়াজ, হলুদ, মরিচ, সরিষা, পাট কেনার ক্ষেত্রে বার্ষিক সরবরাহ মূল্য ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ১% উৎসে কর কর্তনের আওতার বাইরে রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেটে এই হার ১% থেকে কমিয়ে ০.৫% করা হয়েছে।
Advertisement
৩. রিসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিতে ভাঙারি সরবরাহের ক্ষেত্রে বার্ষিক সরবরাহ মূল্য ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ৩% উৎসে কর কর্তনের আওতার বাইরে রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। বাজেটে এই হার ৩% থেকে কমিয়ে ১% করা হয়েছে।
৪. উৎসে কর কর্তন সংক্রান্ত একটি কম্প্রিহেন্সিভ রিটার্ন প্রতি মাসের পরিবর্তে ষাণ্মাসিক জমা দেওয়ার বিধান করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে উৎসে কর্তিত কর জমা সংশ্লিষ্ট ট্রেজারি চালানের সারসংক্ষেপ প্রতি মাসেই জমা দেওয়ার বিধানের বিপরীতে ফাউন্ডেশনের প্রস্তাবে এটি এখন কোয়ার্টারলি করা হয়েছে।
৫. প্লাস্টিক পণ্য বা লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যের আমদানি পর্যায়ে শুল্ক কর/মিনিমাম ভ্যালু বৃদ্ধির প্রস্তাবের বিপরীতে প্লাস্টিক টয়ের মিনিমাম ভ্যালু ৩.৫ থেকে ৪.০ করা হয়েছে।
৬. দেশেই উৎপাদন/তৈরি হয় এ রকম পণ্যের আমদানি পর্যায়ে মিনিমাম ভ্যালু বৃদ্ধির প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত বাজেটে বিভিন্ন ধরনের কসমেটিকস, লোশন, লিপস্টিক, বিভিন্ন ধরনের চকলেট ও লকের মিনিমাম ভ্যালু বাড়ানো হয়েছে।
বিএ/এমএস