কুমিল্লার দেবিদ্বারে একটি সড়কে হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ। পরে সড়কের কাজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
Advertisement
সোমবার (২৩ জুন) বিকেলে তার নিজ এলাকায় একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি সড়কটি পরিদর্শনে যান। পরে সত্যতা পাওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে কাজটি বন্ধ করে দেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সড়কটি উপজেলা সদরের সুবিল, ফতেহাবাদ, রসুলপর ইউনিয়নের প্রায় ২০ গ্রামের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম সড়ক। দীর্ঘদিন কাজটি সম্পন্ন না করায় স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগে পড়েন। সদ্য কার্পেটিং করা সড়কের পিচগুলো হাত দিয়ে টান দিলেই হাতে চলে আসে। সোমবার স্থানীয়রা বিষয়টি হাসনাত আব্দুল্লাহকে জানালে তিনি বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে যান। এসময় তার হাতে থাকা একটি স্ক্রুড্রাইভার দিয়ে টান দিলে কার্পেটিং চলে আসে হাতে।
এসময় তার সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীদেরও হাত টেনে কার্পেটিং তুলতে দেখা যায়। হাসনাত বিষয়টি স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর মুরাদনগরের এক কর্মকর্তাকে ফোনে অবগত করেন। এরপর দ্রুত ঘটনাস্থলে যান উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ চন্দ্র সরকার। তিনি বিষয়টি নিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহর সঙ্গে কথা বলেন এবং কাজটি দ্রুত শেষ করবেন বলে জানান।
Advertisement
উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ চন্দ্র সরকার জানান, ২০১৮ সালে রসুলপুর ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর থেকে সুবিল ইউনিয়নের বুড়িরপাড় বাজার পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার মিটার সড়কের কাজ পায় ‘মেসার্স আরতার অ্যান্ড ইয়েস্টেড ইন্টারন্যাশনাল’ কোং লিমিটেড। এ কাজের তৎকালীন ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় সোয়া দুই কোটি টাকা। ওইসময় সুবিল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও সুবিল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের সরকার সাব কন্ট্রাকে কাজটি শুরু করেন।
তিনি আরও জানান, মেকাডম (কার্পেটিংয়ের নিছে যে অংশ থাকে) করার পর করোনা শুরু হলে সড়কটির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘ সাত বছরেও এর কার্পেটিং করা হয়নি। ৫ আগস্টের পর গত মে মাসে সড়কটির কার্পেটিংয়ের কাজ শুরু হয়। সোমবার বিকেলে হাসনাত আব্দুল্লাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কার্পেটিং নিয়ে আপত্তি করেন।
এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘কার্পেটিং ৪০ মিলিমিটার দেওয়ার কথা থাকলেও ২২-২৫ মিলি দেওয়া হয়েছে। মাটির ওপর কার্পেটিং করা হয়, যা হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে আসে। তিন দিন আগে ঢালাই করা কাজের এই অবস্থা।’
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল মতিন বলেন, ঠিকাদার নিয়মবহির্ভূত কাজ করেছেন। টেন্ডারে যেভাবে উল্লেখ ছিল, এই কার্পেটিং তুলে নতুন কার্পেটিং করতে হবে। অন্যথায় ঠিকাদারকে এই কাজের বিল দেওয়া হবে না।
Advertisement
জাহিদ পাটোয়ারী/এসআর/এমএস