কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে কলেজ কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলা ও গাফিলতির কারণে মেধাবী এক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের ফি দিলেও তার ফরম পূরণ সম্পন্ন হয়নি। ফলে সহপাঠীরা প্রবেশপত্র নিয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিলেও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন তিনি।
Advertisement
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম মোশাররফ হোসেন। তিনি রাজীবপুর সরকারি কলেজের মানবিক শাখার আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
জানা গেছে, গত মার্চ মাসে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের কার্যক্রম শুরু করে রাজিবপুর সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষ। ফি নির্ধারণ করা হয় ২ হাজার ৩৬৫ টাকা। কলেজের চাহিদা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে ফি পরিশোধ করেও ফরম পূরণ হয়নি।
শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেনের বলেন, ‘আমরা ছয় বন্ধু একসঙ্গে ফরম পূরণ করি। সেসময় আমাদের কাছে থাকা অতিরিক্ত দুটি রশিদ কলেজের সহকারী অফিস সহায়ক শাজাহান মিয়া নিয়ে নেন। সোমবার (২৩ জুন) আমরা কলেজে অ্যাডমিট কার্ড (প্রবেশ পত্র) নিতে যাই। সবাইকে অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হলেও আমারটা পাওয়া যায়নি। পরে শিক্ষকরা জানান আমার ফরম পূরণ হয়নি। এবার পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। আগামী বছর পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।’
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কলেজে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অপেক্ষা করি। পরে কলেজের শাজাহান স্যার আমাকে ডেকে বলেন ’ফরম পূরণ করতে চাইলে পাঁচ হাজার টাকা লাগবে।’ আমার কাছে টাকা না থাকায় একজন বড় ভাইয়ের কাছ থেকে ধার নিয়ে কলেজের কম্পিউটার অপারেটর মনোয়ার হোসেনের কাছে টাকা জমা দিই।’
শিক্ষার্থীর কাছে বাড়তি টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে কলেজের কম্পিউটার অপারেটর মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মিস ফরম ফিলাপের জন্য পাঁচ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে।’
তবে কলেজের সহকারী অফিস সহায়ক মো. শাজাহান বলেন, ‘ভুলবশত তার ফরম পূরণ হয়নি। কলেজের ফান্ডে টাকা না থাকায় সাময়িকভাবে মোশাররফের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে পাঁচ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হবে।‘
কলেজ কর্তৃপক্ষের এমন গাফিলতিতে হতাশা প্রকাশ করে জাহিদ মিয়া নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘স্যারদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে মোশাররফের ফরম পূরণ হয়নি। এখন তার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমরা চাই দ্রুত তার ফরম পূরণ করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হোক।’
Advertisement
এ বিষয়ে রাজীবপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুর কাদের জানান, ‘কোনো কারণে হয়ত তার ফরম পূরণটি মিসটেক হয়েছে। পরে বিষয়টি জানার পর বোর্ডে টাকা পাঠানো হয়েছে। আশা করছি সে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।’
রোকনুজ্জামান মানু/এমএন/জেআইএম