টানা ৩ কার্যদিবস কিছুটা দরপতনের পর বুধবার (১৬ জুলাই) দেশের শেয়ারবাজারে আবার বড় উত্থান হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে।
Advertisement
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন বেড়ে ৭০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর মাধ্যমে চলতি বছরে প্রথমবারের মতো ডিএসইতে ৭০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো। সেইসঙ্গে আট মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেনের ঘটনা ঘটলো।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেইসঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। সেইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
Advertisement
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৬৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৯টির। আর ৫১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৫১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৪২টির দাম কমেছে এবং ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৫৮টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ২১টির দাম কমেছে এবং ৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৫৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৬টির দাম কমেছে এবং ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৪ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১১৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১১২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯২০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
Advertisement
মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে ৭৩৪ কোটি ৩৮ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬৫৩ কোটি ৬৯ টাকার লেনদেন হয়েছে। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৮০ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত বছরের ৫ নভেম্বরের পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।
এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে সিপার্ল বিচ রিসোর্ট। কোম্পানিটির ২২ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৪৫ লাখ টাকার। ২১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং, মিডল্যান্ড ব্যাংক, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, অ্যাডভান্সড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ (এসিআই) এবং টেকনো ড্রাগস।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১০৫ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৮ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৪টির এবং ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
এমএএস/এমএএইচ/এমএস