গত শুক্রবার (সৌদি আরবে ১১ জুলাই ২০২৫ খৃষ্টাব্দ মোতাবেক ১৬ মহররম ১৪৪৭ হিজরি) মসজিদুল হারামে জুমার নামাজ পড়ান শায়খ ড. বানদার বালীলাহ। তিনি প্রায় এক দশক যাবত মসজিদে হারামের ইমাম হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
Advertisement
১৯৭৫ সালে সৌদি আরবের মক্কায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মক্কার উম্মুল কুরা ইউনিভার্সিটি থেকে ইসলামি আইনে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন এবং ইসলামি ফিকহে মাস্টার্স করেন। ২০০৮ সালে তিনি মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
গত শুক্রবার মসজিদুল হারামে জুমার খুতবায় তিনি বলেন:দুনিয়ায় আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা ও বিপদাপদ সবার জীবনে আসে। নেককার ব্যক্তিরাও বিপদ ও পরীক্ষার মুখে পড়েন। যদি কোনো বিশেষ ব্যক্তি বা দলের জন্য আল্লাহ তাআলা পরীক্ষা বা বিপদাপদ থেকে পুরোপুরি মুক্ত থাকার ফয়সালা করতেন, তাহলে তা করতেন তার সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ—নবীগণের (আলাইহিমুস সালাম) জন্য। তারাই ছিলেন আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত, সবচেয়ে পরহেজগার এবং আল্লাহর সবচেয়ে বেশি নৈকট্যপ্রাপ্ত মানুষ।
আল্লাহ তার নবিদেরও দুনিয়ায় বিপদমুক্ত রাখেননি। নবিদের জীবনেও বিভিন্ন রকম বিপদাপদ এসেছে, তারাও আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে পরীক্ষায় পড়েছে। মানবজাতির আদি পিতা নবি আদমের (আলাইহিস সালাম) কথা ভেবে দেখুন! তাকে জান্নাত থেকে বের কয়ে দেওয়া হয়েছিল, দুনিয়ায় নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। নবি জাকারিয়াকে (আলাইহিস সালাম) আল্লাহ তাআলা যৌবনে সন্তানহীন রেখেছিলেন। অতিবৃদ্ধ বয়সে তার দোয়ায় আল্লাহ তাআলা তাকে সন্তান দান করেন।
Advertisement
নবি আইয়ুবকে (আলাইহিস সালাম) আল্লাহ তাআলা দীর্ঘকাল রোগাক্রান্ত রেখে পরীক্ষা করেছিলেন। ইউনুস (আলাইহিস সালাম) তিমি মাছের পেটে আটকা পড়েছিলেন। আমাদের নবি মুহাম্মাদকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার নিজের জাতির লোকজন ঘর ও জন্মভূমি থেকে বের করে দিয়েছিল। এর আগে তারা তাকে আবু তালিবের উপত্যকায় অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। ক্ষুধার যন্ত্রণায় তিনি, তার পরিবার-পরিজন ও সাহাবিরা গাছের পাতা খেতে বাধ্য হয়েছিলেন। আল্লাহ তাআলা তাদের সকলের প্রতি সন্তুষ্ট হোন।
সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবিজিকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞাসা করেছিলাম, হে আল্লাহর রাসুল, কারা সবচেয়ে বেশি কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়?
নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, নবিগণ, তারপর নেককার ব্যক্তিরা। একজন মানুষ তার দ্বীনদারির দৃঢ়তা অনুযায়ী পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। যদি তার দ্বীনি প্রতিশ্রুতি মজবুত হয়, তাহলে তার পরীক্ষা কঠিন হয়। আর যদি তার দ্বীনি প্রতিশ্রুতি দুর্বল হয়, তাহলে পরীক্ষা হালকা হয়। একজন ব্যক্তি এভাবে পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যায় যতক্ষণ না সে পুরোপুরি পাপমুক্ত হয়। (মুসনাদে আহমদ)
সূত্র: ইনসাইড দ্যা হারামাইন
Advertisement
ওএফএফ/জিকেএস