আইসক্রিম খেতে ভালোবাসেনা এমন মানুষ খুঁজে পওয়াই কঠিন। কিন্তু এই ডেজার্টটি বিশ্বময় সব বয়সের মানুষের কাছে কেন এতো জনপ্রিয়?
Advertisement
ঠান্ডা, মিষ্টি, ক্রিমি টেক্সচারের এই ডেজার্ট ভালোবাসার কারণ শুধু স্বাদ নয়। আবেগ, স্মৃতি, বিজ্ঞান এবং মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়া এর সঙ্গে জড়িত। তাহলে আজ (২০ জুলাই) বিশ্ব আইসক্রিম দিবসে চলুন জেনে নেই কেন আমরা আইসক্রিম এত ভালোবাসি-
১. আনন্দ হরমোন ডোপামিনআইসক্রিমে থাকা চিনি ও চর্বি মস্তিষ্কে ডোপামিন নামক হরমোন করায়, যা আনন্দের অনুভূতি জাগায়। ডোপামিন হলো মনের আনন্দ সৃষ্টিকারী রাসায়নিক। এই রাসায়নিকের কারণে আমরা আইসক্রিম খেতে শুরু করলেই আনন্দ পেতে শুরু করি। এ যেন মিষ্টি একটু আসক্তি।
২. ঠান্ডা, মসৃণ ও মিষ্টিআইসক্রিমের ঠান্ডা অনুভূতি, মসৃণ ক্রিমি টেক্সচার এবং মিষ্টি স্বাদের সমন্বয় আমাদের জিহ্বার স্নায়ু ও মনের অনুভূতিকে একসঙ্গে সক্রিয় করে তোলে। এই তিনটি উপাদান মানুষকে আকৃষ্ট করে।
Advertisement
কমফোর্ট ফুড হিসেবে খ্যাত আইসক্রিম প্রায়ই শৈশব, ছুটির দিন, পারিবারিক মিলন, জন্মদিন জাতীয় সুখকর স্মৃতির সঙ্গে জড়িত। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় সবাই এমন কোনো আনন্দের স্মৃতির সঙ্গে আইসক্রিমকে সংযুক্ত রাখে, তাই এটি শুধু ডেজার্ট নয় অতীতের মিষ্টি স্মৃতির একটি অংশ হয়ে ওঠে।
এটি একটি আবেগের খেলা। মানসিক চাপ, দুঃখ বা একঘেয়ে মুহূর্তে আমরা আইসক্রিমকে ‘সান্ত্বনার খাদ্য’ হিসেবে গ্রহণ করি।
৪. হতে পারে এক ধরনের খাদ্য আসক্তির শুরুকিছু গবেষণায় দেখা গেছে, যারা অতিরিক্ত আইসক্রিম খায়, তাদের মস্তিষ্কে পুরস্কার কেন্দ্র কম সক্রিয় হয়। অর্থাৎ, স্বাভাবিক পরিমাণে আনন্দ না পেয়ে তারা বেশি খেতে চায়। আবার একই পরিমাণে আনন্দ পেতে একটা চক্রে পড়ে যায়, যেমনটা হয় ড্রাগ আসক্তির ক্ষেত্রে।
৫. রুচি ও বায়োলজিক্যাল কারণমানুষের ব্রেন প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি, চর্বি এবং ঠান্ডা তিন দিকেই আকৃষ্ট হয়, এগুলো দেহে শক্তির সংকেত পাঠায়। আর আইসক্রিমে এই তিনটি উপাদান মিলেই এক বিশেষ আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা তৈরি হয়।
Advertisement
আইসক্রিম শুধু খাবার নয়, এটি যেকোনো উপলক্ষ্য উদযাপনের একটি মাধ্যম। তাছাড়া আমাদের দেশে আইসক্রিমের প্রচলন হয়েছে এক ধরনের বিলাসবহুল খাদ্য হিসেবে, তাই এটি এক ধরনের উৎসবের মতো আনন্দ তৈরি করতে পারে।
আইসক্রিম মস্তিষ্কে সুখের রাসায়নিক প্রভাব, স্মৃতি ও আবেগের সংযোগ, সামাজিক মিলনের অনুভূতি, ইত্যাদি মিলে তৈরি হওয়া এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। তবে, এটি আনন্দদায়ক হলেও মিতব্যয়ীতার সঙ্গে উপভোগ করা উচিত।
সূত্র: আনকমন ফুড, বনঅ্যাপেটিট, সিএনএন, ক্লাউডআর্মি, অরিগন রিসার্চ ইন্সটিটিউট
এএমপি/জিকেএস