খেলাধুলা

ব্যাটিং সহায়ক উইকেটেই বোঝা গেলো বাংলাদেশের ব্যাটারদের সামর্থ্য

ব্যাটিং সহায়ক উইকেটেই বোঝা গেলো বাংলাদেশের ব্যাটারদের সামর্থ্য

৭ উইকেট ও ৮ রানের পরাজয়ের পর অবশেষে ৭৪ রানের বড় জয়ে সিরিজ শেষ করলো পাকিস্তান। খালি চোখে এটা সান্ত্বনার জয় আগা সালমান বাহিনীর। শুধু কি সান্ত্বনার জয়? পাকিস্তানিদের জন্য তো আসলে এটা নৈতিক জয়ও বটে।

Advertisement

প্রথম থেকেই তারা বলে আসছে, এ উইকেট টি-টোয়েন্টির জন্য আদর্শ নয়। এশিয়া কাপ আর বিশ্বকাপের আগে কোনো দলের প্রস্তুতির জন্য এই উইকেটে খেলা মোটেই ভাল কিছু নয়। পাকিস্তান হেড কোচ মাইক হেসন প্রথম ম্যাচের পরই এমন মন্তব্য করেছিলেন। পরের ম্যাচে ফাহিম আশরাফের লড়াকু ব্যাটিংয়ের পরও ৮ রানে হারের পর মনে হয়েছে এ উইকেটে টাইগারদের হারানোর ক্ষমতা নেই পাকিস্তানিদের।

কিন্তু আজ বৃহস্পতিবার শেষ ম্যাচে বদলে যাওয়া উইকেটে ৭৪ রানের বড় জয়ে আগা সালমানের দল জানান দিল, ‘প্রথম দুই ম্যাচে প্রতিকূল কন্ডিশনে আমরা নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারিনি। আজ শেষ দিন ভাল উইকেট পেয়ে আমরা নিজেদের ফিরে পেয়েছি।’

সত্যিই তাই। আগের দুই ম্যাচের স্লো, ডাবল পেসড পিচে পাকিস্তানিরা কি স্ট্রাগলটাই না করেছে! টপ অর্ডারে প্রথমদিন ফাখর জামান তবু বার দুয়েক জীবন পেয়ে করেছিলেন ৪৩। কিন্তু সাইম আইয়ুব, মোহাম্মদ হারিস, অধিনায়ক আগা সালমান আর হাসান নাওয়াজরা প্রথম দুই ম্যাচেই ছিলেন চরম ব্যর্থ।

Advertisement

শেষ ম্যাচে ১৫ রানে ৫ আর ৪৭ রানে ৭ উইকেট পতনের পর নিচের দিকে ফাহিম আশরাফ (৩২ বলে ৫১), আব্বাস আফ্রিদি (১৩ বলে ১৯), আহমেদ দানিয়েল (১১ বলে ১৭) ও খুশদিল শাহ (১৩) প্রাণপণ চেষ্টায় দলকে ১২৫ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান।

সেখানে আজ তুলনামূলক ব্যাটিং সহায়ক পিচে সেই পাকিস্তানি টপ অর্ডারের অন্যরূপ। সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া সাহিবজাদা ফারহান (৪১ বলে ২৩), সাইম আইয়ুব (১৫ বলে ২১), হাসান নাওয়াজ (১৭ বলে ৩৩) ও মোহাম্মদ নাওয়াজ (১৬ বলে ২৭) প্রত্যেকে হাত খুলে খেলেছেন।

বৃহস্পতিবার বল ব্যাটে এসেছে। উইকেটের গতি ও বাউন্সেও স্থিতি ছিল। বল বেশ ভালোমতোই ব্যাটে এসেছে। দুই রকম গতিতে (ডাবল পেসড) আসেনি। বাউন্সটাও ঠিক ছিল। এরকম কন্ডিশনে আগে ব্যাট করার সুযোগটা পুরোই কাজে লাগিয়েছেন পাকিস্তানিরা।

এ ম্যাচে প্রথম সুযোগ পাওয়া বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদই (৪ ওভারে ২/২২) শুধু ভালো বোলিং করেছেন। এ ছাড়া বাকি বোলাররা হালে পানি পাননি। আগের ২ ম্যাচে ডাবল পেসড পিচে পাকিস্তানি ব্যাটারদের কাছ থেকে সমীহ আদায় করলেও আজ ব্যাটিং সহায়ক পিচে অফস্পিনার শেখ মেহেদী (৩ ওভারে ০/৩৬), শরিফুল (১/৩৯), তাসকিন (৪ ওভারে ৩/৩৮), সাইফউদ্দীন (৪ ওভারে ১/২৮) ও মেহেদি হাসান মিরাজ (১ ওভারে ০/১৪) - প্রত্যেকে বেদম মার খেয়েছেন।

Advertisement

তাদের বোলিং দেখে বোঝা গেছে বোলিং সহায়ক পিচে তাদের বল যতটা কার্যকর, ব্যাটিং সহায়ক পিচে তারা ততটাই অকার্যকর। একই অবস্থা ব্যাটারদেরও। স্লো পিচে পারভেজ ইমন আর জাকের আলী অনিক ও শেখ মেহেদীরা ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেও আজ ব্যাটিং পিচে তারা কিছুই করতে পারেননি।

যে পিচে পাকিস্তানিরা স্বচ্ছন্দে একের পর এক চার ও ছক্কার প্রদর্শনী ঘটিয়েছেন, সেই পিচে তানজিদ তামিম, নাইম শেখ, অধিনায়ক লিটন দাস, মেহেদি হাসান মিরাজ, শামীম পাটোয়ারীদের সে কি অসহায় আত্মসমর্পণ! বোঝাই গেল ১৭৯ রানের বড় টার্গেট ছুঁতে গিয়ে লেজে-গোবরে করে ফেলেছিলেন তারা।

কঠিন সত্য হলো- উইকেট যেমনই হোক, বাংলাদেশের ব্যাটারদের সামর্থ্য ঘুরেফিরে ১৩০ থেকে ১৪০। ১৮০ রানের টার্গেট সামনে পড়লেই তাদের জারিজুরি ফাঁস হয়ে যায়। তারা কী করবেন, ভেবে পান না। এলোমেলো ব্যাট চালান শিক্ষানবিশদের মত। আজকের ম্যাচের পারফরমেন্সটা যে তার বড় প্রামাণ্য দলিল!

এআরবি/আইএইচএস