ফিচার

বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা ৫ জনের জীবন কেমন ছিল

একবিংশ শতাব্দীতে একজন মানুষের গড় উচ্চতা পুরুষের প্রায় ৫ ফুট ৭.৫ ইঞ্চি এবং নারীর ৫ ফুট ২.৫ ইঞ্চি। স্থানভেদে এর আবার কমবেশিও আছে। তবে বিশ্বে এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা উচ্চতায় অনেক লম্বা। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা ব্যক্তির নাম সুলতান কোসেন।

Advertisement

শুধু সুলতান নয়, আরও অনেকেই এই রেকর্ডের তালিকায় নিজেদের নাম যুক্ত করতে পেরেছেন। তবে জানেন কি, সবচেয়ে লম্বা মানুষের স্বীকৃতি পেলেও তাদের জীবনযাপন কিন্তু স্বাভাবিক মানুষের মতো এত স্বাভাবিক ছিল না তা বলাই বাহুল্য।

ছোটবেলা থেকে শারীরিক নানান সমস্যা, সমাজের থেকে একটু আলাদা দৃষ্টি কখনোই তাদের নিজেদের স্বাভাবিকভাবে ভাবতে দেয়নি। তাদের উচ্চতা প্রাকৃতিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল, যা সাধারণ মানুষের গড় উচ্চতার তুলনায় অনেক বেশি। তবে সবার মধ্যে রবার্ট ওয়াডলো এখনো বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে লম্বা ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃত। অধিকাংশ লম্বা ব্যক্তিই স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে দীর্ঘ জীবন পাননি। তাদের দেহের অতিরিক্ত বৃদ্ধি সাধারণত হরমোনজনিত রোগের ফলে হয়েছিল।

চলুন এমন ৫ জন সম্পর্কে আজ জেনে নেওয়া যাক- রবার্ট ওয়াডলো

রবার্ট ওয়াডলোকে বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে লম্বা ব্যক্তি হিসেবে ধরা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি তার জন্ম। তার উচ্চতা ছিল ৮ ফুট ১১.১ ইঞ্চি (২.৭২ মিটার)। শৈশব থেকেই তার দেহ দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে, যা হাইপারপিটুইটারিজম নামক হরমোনজনিত সমস্যার কারণে হয়েছিল। মাত্র ৮ বছর বয়সে তিনি তার বাবার চেয়ে লম্বা হয়ে যান। তার উচ্চতার কারণে তিনি বিশেষভাবে তৈরি পোশাক ও জুতা পরতেন। ১৯৪০ সালের ১৫ জুলাই মাত্র ২২ বছর বয়সে সংক্রমণের কারণে তার মৃত্যু হয়।

Advertisement

জন রোগান

জন রোগান ছিলেন বিশ্বের দ্বিতীয় লম্বা ব্যক্তি। ১৮৬৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে তার জন্ম। তার উচ্চতা ছিল ৮ ফুট ৯ ইঞ্চি (২.৬৭ মিটার)। ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি স্বাভাবিক ছিলেন, তবে এরপর তার দেহ দ্রুত বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। তার উচ্চতা এত বেশি ছিল যে, তিনি হাঁটতে পারতেন না এবং হুইলচেয়ারে চলাফেরা করতেন। তার দেহ ছিল খুবই হালকা, এবং তার ওজন মাত্র ৯২ কেজি ছিল। ১৯০৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তিনি মারা যান।

জন ক্যারল

জন ক্যারল, বাফেলো জায়ান্ট নামে পরিচিত। তিনি ছিলেন ৮ ফুট ৮ ইঞ্চি (২.৬৪ মিটার) লম্বা। তার উচ্চতা দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে অ্যাক্রোমেগালি নামক রোগ দায়ী ছিল। তিনি স্কোলিওসিস নামক মেরুদণ্ডের একটি গুরুতর সমস্যায় ভুগছিলেন, যা তার দেহের কাঠামোকে বিকৃত করে তুলেছিল। এই রোগের কারণে তার উচ্চতা সঠিকভাবে পরিমাপ করা কঠিন ছিল। জনের জন্ম ১৯৩২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এবং ১৯৬৯ সালে তিনি মারা যান।

লিওনিড স্ট্যাডনিক

১৯৭০ সালে ইউক্রেনে জন্ম লিওনিড স্ট্যাডনিকের। তিনি ছিলেন একজন কৃষক। তার উচ্চতা ছিল ৮ ফুট ৫ ইঞ্চি (২.৫৭ মিটার)। তিনি ১৩ বছর বয়সে মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পর অত্যধিক গ্রোথ হরমোন নিঃসরণের কারণে দ্রুত লম্বা হতে থাকেন। তিনি জনসাধারণের মনোযোগ এড়িয়ে চলতে চাইতেন। অন্যরা তার উচ্চতার জন্য আগ্রহ দেখালেও তিনি এসবে পাত্তা দিতেন না। নিজের মতোই থাকতে পছন্দ করতেন। এজন্য তিনি কখনো গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের অফিসিয়াল স্বীকৃতিও গ্রহণ করেননি। ২০১৪ সালের ২৪ আগস্ট লিওনিড স্ট্যাডনিক মৃত্যুবরণ করেন।

ট্রান ভান হাই

ট্রান ভান হাই ছিলেন একজন ভিয়েতনামী ব্যক্তি। যিনি ৮ ফুট ২ ইঞ্চি (২.৪৯ মিটার) লম্বা বলে দাবি করা হয়। তবে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি। তিনি তার দীর্ঘ চুলের জন্যও পরিচিত ছিলেন, যা প্রায় ২২ ফুট লম্বা ছিল। ১৯৪১ সালে ভিয়েতনামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০১০ সালে তার মৃত্যু হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন জীবনের ১০০ বসন্ত পার, প্রেমের পর ঘর বাঁধলেন দম্পতি  পানির ১৬৩ ফুট নিচে ফটোশ্যুট করলেন তরুণী 

কেএসকে/জিকেএস