ইতালিতে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাসিন্দারা শোনাচ্ছে উৎসাহের গান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:০৩ পিএম, ১৩ মার্চ ২০২০

‘আমাদের মতো মানুষেরা কখন হাল ছেড়ে দেয় না; আমাদের মতো মানুষেরা; আমাদের মতো মানুষেরা কখন হাল ছেড়ে দেয় না; এগিয়ে যাও ইতালি, এগিয়ে যাও নেপলি; সবসময়’-এটা কোনো গীতিকারের গানের কথা নয়। তবে গানের মতো করেই কথাগুলো শুনিয়েছে ইতালির নেপলি শহরে কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাসিন্দারা।

নেপলি ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি শহর। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শহরটিতে ৯৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা গেছে। তবে করোনা রুখতে ইতালি সরকারের কঠোর নির্দেশনার কারণে পুরো শহরের বাসিন্দাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার রাতে নেপলি শহরে এক অবিশ্বাস্য মুহূর্ত ধরা পড়ে। শহরের বাসিন্দারা বেলকনিতে এসে অন্যদের উৎসাহের গান শোনাচ্ছে। কোরাসে তারা গেয়ে উঠছে-‘তোমরা হাল ছেড়ে দিও না, আমাদের মতো মানুষেরা কখন হাল ছেড়ে দেয় না।’

একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নেপলিতানরা উচ্চস্বরে গেয়ে শোনাচ্ছে-‘আমরা বাড়িতেই থাকব। এগিয়ে যাও ইতালি, এগিয়ে যাও নেপলি’। করোনাভাইরাস ভীতি দূর করতে এ সময় তাদের ফুটবল সংগীতও গেয়ে শোনাতে দেখা যায়।

সুসি ইউনিকা সিলভেসত্রি নামে একটি অ্যাকাউন্ট থেকে বৃহস্পতিবার রাতে ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার দেয়া হয়। আপলোডের সঙ্গে সঙ্গে এটি ভাইরাল হয়ে যায়।

আবার কাউকে কাউকে উচ্চস্বরে কোরাসে বলতে শোনা যায়, আমরা সবাই একতাবদ্ধ। আপনারা সবাই বেলকনিতে চলে আসুন। আমরা যে ভাইরাস মোকাবিলা করছি তা আমাদের পরাজিত করতে পারবে না।’

উৎপত্তিস্থল চীনে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও এই মুহূর্তে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ইতালিতে। চীনের বাইরে সর্বোচ্চ আক্রান্ত এবং মৃত্যুর ঘটনা এখন ইতালিতে। দেশটির সরকার গোটা ইতালিতে অবরুদ্ধ করে রাখলেও প্রতিদিন নতুন করে সেখান থেকে শত শত মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে।

ইতালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ১৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে নতুন এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৬ জনে। দেশটির সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি এ তথ্য দিয়ে জানিয়েছে, ইতালিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১৫ হাজার ১১৩।

প্রাণঘাতী করোনা দেশজুড়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় এর মোকাবিলায় আরও কঠোর হয়েছে ইতালি সরকার। সর্বোচ্চ ২১ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রেখে নতুন আদেশ জারি করা হয়েছে। এতে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে অস্বীকৃতি জানানোকে ‘বিদ্বেষপ্রসূত হত্যার’ সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

ইতালির সরকার করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে একের পর এক পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে দেশটির উত্তরাঞ্চলে এ ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় দেশটির লম্বারদিয়া অঞ্চলসহ ১৪ প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছে প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কোন্তি।

আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত দুই সপ্তাহের জন্য অফিস, আদালতসহ সবধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে ফার্মেসি, খাবার সরবরাহ, ব্যাংক, পোস্ট অফিস, সংবাদপত্র বিক্রয়, পেট্রোল পাম্প ইত্যাদি সেবা এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে রয়েছে।

সূত্র : ডেইলি মেইল

এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।