পর্যটক ভিসায় তাবলিগের জমায়েতে, ব্যবস্থা নিচ্ছে ভারত
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ভারতের রাজধানী দিল্লির নিজামউদ্দিন এলাকার একটি মসজিদে তিন দিনব্যাপী তাবলিগ-ই-জামাতের আয়োজন করা হয়। ওই জমায়েতে অংশ নেয় দেশ-বিদেশের প্রায় আট হাজার মানুষ। আর সেখান থেকেই হু হু করে বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১ থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে দিল্লির ওই মসজিদে আয়োজিত তাবলিগ-ই-জামাতের জমায়েতে অংশ নেন দেন মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, কিরগিজস্তান থেকে দুই হাজারেরও বেশি প্রতিনিধি। সেখানে অংশ নেয়াদের মধ্যে এখন পর্যন্ত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। আর এতে আক্রান্ত হয়েছে অন্তত ২৪ জন।
তাবলিগ-ই-জামাত উপলক্ষে জমায়েতকারীদের বিরুদ্ধে বড় একটি অভিযোগ এসেছে। ইন্দোনেশিয়া থেকে আসা ধর্ম প্রচারকরা ভিসার নিয়ম ভেঙেছেন বলে জানিয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জানা গেছে, ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রায় ৮০০ জন ধর্ম প্রচারক পর্যটন ভিসায় ভারতে আসেন। কিন্তু তারা এসে তিন দিনব্যাপী ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ভিসার নিয়ম ভাঙায় ইসলামী ধর্মীয় সংগঠন তাবলিগ-ই-জামাতের ইন্দোনেশিয়ার ৫০০ ধর্ম প্রচারককে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে ভিসাচুক্তি রয়েছে। পর্যটকদের ভিসা অন অ্যারাইভাল দেয়া হয়। ওই ৮০০ জন দেশে এসে ভিসা নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, ওডিশা, বিহার, উত্তরপ্রদেশে ছড়িয়ে পড়েন।
করোনা পরিস্থিতিতে কেন্দ্র ও দিল্লি সরকারের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দিল্লির জমায়েতের এই ঘটনা। তিন দিনব্যাপী ওই অনুষ্ঠান দেশ-বিদেশ থেকে প্রায় আট হাজার মানুষের জমায়েত হয়েছিল। ফলে সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ নিয়ে দিল্লিতে বৈঠক চলছে। মসজিদে জমায়েত হয়ে থাকা মানুষজনকে সরানো হয়েছে। পাঠানো হয়েছে আইসোলেশনেও।
দিল্লির ওই তাবলিগ জামাতে অংশ নেওয়া তিন শতাধিক মানুষকে দিল্লির বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা এখন হাসপাতালে আইসোলেশনে রয়েছেন। ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ৯ ব্যক্তি ও তাদের মধ্যে একজনের স্ত্রীর দেহে করোনাভাইরাসে উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে।
মসজিদটির তাবলিগ জামাতের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যে মৌলানা তার নামে এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবন্দি কেজরিওয়াল। পুলিশ বলছে, তারা গত ২৪ মার্চ থেকে আয়োজকদের মসজিদটি খালি করে দেয়ার জন্য বলে আসছিলেন, কিন্তু দেশজুড়ে লকডাউন শুরু হওয়ায় অনেকে তাতে আটকা পড়েন।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে মসজিদের ওই জামাতের মাধ্যমে ভাইরাসটি ভারতজুড়ে ব্যাপক হারে মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এমএসএইচ/পিআর