করোনায় ইতালিতে শতাধিক ডাক্তার-নার্সের মৃত্যু
করোনাভাইরাসের কারণে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হচ্ছে ইতালি। আক্রান্তের দিক থেকে হয়তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে পিছিয়ে তারা। কিন্তু মৃত্যুর দিক থেকে দেশটি এগিয়ে সবার চেয়ে। এখনও পর্যন্ত ১৫ হাজার ৮০০’র বেশি মানুষ চলে গেছে না ফেরার দেশে। আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজারেরও বেশি মানুষ।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগিদের বাঁচানোর জন্য যারা সবচেয়ে বেশি লড়াই করছেন, সেই ডাক্তার আর নার্সরাও কিন্তু রেহাই পায়নি প্রাণঘাতি এই ভাইরাসের আক্রমণ থেকে। ইতালিতে এখনও পর্যন্ত ১০০’র বেশি স্বাস্থ্যকর্মী মৃত্যুবরণ করেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটেনের দ্য ডেইলি মেইল।
এদের মধ্যে ৮০ জন রয়েছেন ডাক্তার এবং ২১জন রয়েছেন নার্স। আবার ২ জন নার্স করোনায় আক্রান্ত মানুষের মানসিক অবস্থা এবেং নিজের সহকর্মীদের মৃত্যুবরণ করতে দেখে হতাশ হয়ে নিজেরাই আত্মহত্যা করেছেন।
ডেইলি মেইল জানাচ্ছে, শুধুমাত্র ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় শহর লোম্বার্ডির একটি হাসপাতালেই ৩০০’রও বেশি স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। লোম্বার্ডি হচ্ছে, ইতালিতে করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ শহর। তবে সব মিলিয়ে পুরো ইতালিতে ১২০০’র বেশি স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
স্বাস্থ্যকর্মীদের এত বেশি হারে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে, পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্টের (পিপিই) অভাব প্রকট আকার ধারণ করায়। স্পেডালি সিভিল হাসপাতালের ইনফেকশাস ডিজিজ ইউনিটের ডিরেক্টর অধ্যাপক ফ্রান্সেসকো কাস্তেলি স্কাই নিউজকে বলেন, ‘এক একজন করে ডাক্তার কিংবা নার্স মৃত্যুবরণ করে, আর আমরা একে অপরকে বলতে থাকি, এরপর কে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবে? মানসিকভাবেই এই প্রশ্নটা আমাদের মধ্যে চলে আসতো। কারণ, আমরা শুধুমাত্র চিকিৎসক সতীর্থ নই, আমরা বন্ধুও।’
যে অবস্থাই হোক, ডাক্তাররাও হাসপাতাল ছেড়ে যেতেন না। যদি না ভাইরাস তাদের নিজেদের বাড়িতে পরিবারের সদস্যদেরও আক্রান্ত করে ফেলে! অধ্যাপক ফ্রান্সেসকো বলেন, ‘আমরা সবাই কিছুটা হলেও সতর্ক-সাবধানি ছিলাম। কারণ, আমাদের মাধ্যমে যেন কোনোভাবেই এই ভইরাস আমাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে না পারে।’
আইএইচএসে/