করোনা মোকাবিলায় দুই দেশে ২৪ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাঠাচ্ছে চীন
করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধ ও চিকিৎসায় সহায়তা করতে আফ্রিকায় বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল টিম পাঠাচ্ছে চীন। দারিদ্রপীড়িত আফ্রিকায় করোনায় সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকায় বুধবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝ্যাও লিজিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে।
বুধবার পর্যন্ত আফ্রিকা মহাদেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মারা গেছেন ৯০০ জন। ঝ্যাও লিজিয়ান বলেছেন, চীন দুটি বিশেষজ্ঞ মেডিক্যাল টিম আফ্রিকার দুই দেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরমধ্যে তিয়ানজিন মিউনিসিপ্যাল পিপলস হাসপাতালের ১২ জন বিশেষজ্ঞ যাবেন বুরকিনা ফাঁসোতে। এছাড়া সিচুয়ান ইউনিভার্সিটি এবং ওয়েস্ট চায়না হাসপাতালের একই সংখ্যক বিশেষজ্ঞের অপর একটি দল যাবেন ইথিওপিয়ায়।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবারই বিশেষজ্ঞ দল ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় পৌঁছাবে। দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত ইথিওপিয়ায় এখন পর্যন্ত ৮৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন অন্তত তিনজন। দেশটির করোনা পরীক্ষার সক্ষমতাও অপ্রতুল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, আঞ্চলিক যুদ্ধে বিধ্বস্ত বুরকিনা ফাঁসোতে গত বছর ৮ লাখের বেশি মানুষ বাস্ত্যুচুত হয়েছেন। এ দেশটিতেও এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৪২ এবং প্রাণ হারিয়েছেন ৩২ জন।
ঝ্যাও বলেন, চীনা বিশেষজ্ঞরা সেখানে গিয়ে তাদের মহামারি-রোধী অভিজ্ঞতা এবং সঠিক দিক-নির্দেশনা দেবেন। এছাড়া এ দুই দেশের স্থানীয় মেডিক্যাল ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে কৌশলগত এবং প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতা বাড়ানোর ব্যাপারে পরামর্শ দেবেন তারা।
এর আগে, আফ্রিকান ইউনিয়নের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এই মহাদেশে বিভিন্ন ধরনের মেডিক্যাল সরঞ্জাম এবং বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়েছে চীন। প্রায় ৬০ বছর ধরে আফ্রিকা মহাদেশের বিপদের সময় মেডিক্যাল টিম পাঠানোর চীনা ঐতিহ্য আছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
চীনের সরকারি তথ্য বলছে, করোনাভাইরাসের মহামারি শুরু হওয়ার পর আফ্রিকা মহাদেশে অন্তত এক হাজার চীনা মেডিক্যাল কর্মকর্তা কাজ শুরু করেছেন। ঝ্যাও বলেন, চীনা এবং আফ্রিকান বিশেষজ্ঞরা ইতোমধ্যে একাধিকবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে করোনাভাইরাস মোকাবিলার বিভিন্ন কৌশল বিনিময় করেছেন।
বুরকিনা ফাঁসো এবং ইথিওপিয়ার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। এ দুটি দেশে করোনার বিস্তার শুরু হলে তা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, আফ্রিকার অনেক দেশের মতো এ দুই দেশেও চিকিৎসক, নার্স, ধাত্রীর প্রচুর সঙ্কট আছে। দেশ দুটির প্রতি এক হাজার মানুষের জন্য হাসপাতালের শয্যার সংখ্যা মাত্র একটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ইথিওপিয়া এবং বুরকিনা ফাঁসোতে করোনার ব্যাপক ট্রান্সমিশন শুরু হলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যাবে।
সূত্র : সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
এসআইএস/এমকেএইচ