জার্মানির ৬০ শতাংশ করোনা রোগী এখন সুস্থ
প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্র ইউরোপ হলেও করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় সফল মনে করা হচ্ছে জার্মানিকে। দেশটির উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, আগাম সতর্কতা ও ব্যাপক হারে পরীক্ষাকে এর প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সর্বশেষ হিসাব বলছে, জার্মানির ৬০ শতাংশের বেশি করোনা রোগী এখন সুস্থ। আর কোনো দেশে এত রোগী এখনো সুস্থ হয়নি।
করোনার হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, গোটা বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এখন ২৩ লাখ ছুঁই ছুঁই। আক্রান্ত এসব মানুষের মধ্যে ১ লাখ ৬৩ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার করে মানুষ মারা যাচ্ছে বিশ্বজুড়ে। সবচেয়ে বাজে অবস্থা ইউরোপের দেশগুলোতে। শুধু ইউরোপেই মৃতের সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে।
ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য আর বেলজিয়ামসহ ইউরোপের বেশিরভাগ দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা প্রতিদিন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। কিন্তু ১ লাখ ৪৪ হাজারের বেশি আক্রান্ত নিয়ে জার্মানিতে এখন পর্যন্ত সাড়ে ৪ হাজারের কিছু বেশি মানুষ মারা গেছে। যেখানে ১ লাখ ২০ হাজার আক্রান্ত নিয়ে যুক্তরাজ্যে মৃতের সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
তবে সবচেয়ে আশাব্যঞ্জক বিষয় হলো, জার্মানিতে প্রায় দেড় লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হলেও চিকিৎসা সেবা দিয়ে দেশটি ৮৮ হাজারের বেশি মানুষকে সুস্থ করে তুলেছে। সেখানে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থতার হার প্রায় ৬১ শতাংশ। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ ৭ লাখ ৪২ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সুস্থ হয়েছেন মাত্র ৬৮ হাজার রোগী।
মহামারি করোনায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দেশগুলোর হিসাবটা তাহলে দেখে নেওয়া যাক। স্পেনে করোনায় আক্রান্ত ১ লাখ ৯৫ হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭৭ হাজারের বেশি। দেশটিতে মারা গেছে ২০ হাজার ৪০০ এর বেশি। এছাড়া ইতালিতে আক্রান্ত ১ লাখ ৭৮ হাজারের মধ্যে মারা গেছে ২৩ হাজার ৬০০ এর বেশি। সুস্থ ৪৭ হাজার।
এদিকে ফ্রান্সে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত ১ লাখ ৫২ হাজারের বেশি রোগীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৯ হাজার ৭০০ এর বেশি মারা গেছে। আক্রান্ত দেড় লক্ষাধিক রোগীর মধ্যে মাত্র ৩৬ হাজার ৫০০ জন। তবে করোনার উৎপত্তিস্থল চীনে আক্রান্ত প্রায় ৮৩ হাজারের মধ্যে ৭৭ হাজার সুস্থ হয়েছেন। সুস্থতার হারে দেশটি অবশ্য জার্মানিরও উপরে।
জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেন্স স্প্যান গত শুক্রবার বলেছেন, তার দেশের করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে এসেছে বলে দাবি করেন তিনি জানান, দেশে এখন সুস্থ হয়ে ওঠা মানুষের সংখ্যা নতুন আক্রান্তের সংখ্যার চেয়ে বেশি।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্প্যান বলেন, ‘আজকের নিরিখে বলতে পারি, এই মহামারি এখন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে এসেছে। দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা স্থিতিশীল আছে বলেও জানান তিনি। জার্মান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন কথা এটাই প্রমাণ করে যে, তাদের লকডাউন এবং ব্যাপকহারে পরীক্ষার মতো পদক্ষেপ সফল হয়েছে।
এসএ