ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হলে মৃত্যুহার শূন্যে আনা সম্ভব নয় : ইতালি

করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত ইতালিতে মৃত্যুর হার কমতে শুরু করায় ইতোমধ্যে লকডাউন শিথিলের ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। এ ভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় (২৬ এপ্রিল) দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ২৬০ জনের, যা ৫০ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন মৃত্যুহার। ফলে আশার আলো দেখছে দেশটির জনগণ। যদিও দেশটির প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত ইতালিতে মৃতুহার শূন্যে আনা সম্ভব নয়।
নতুন ঘোষণা নিয়ে রোববার দ্বিতীয় ধাপে জাতির উদ্দেশ্যে ও টেলি সংবাদ সম্মেলনে দেশটির সার্বিক পরিস্থিতির ওপর আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কোন্তি।
করোনা সংক্রমণের কারণে গত ৯ মার্চ থেকে লকডাউন চলছে ইতালিতে। দেশটিতে বন্ধ রয়েছে অনাবশ্যক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, চলাচলে রয়েছে কড়া নিষেধাজ্ঞা। কেবল জরুরি নিত্যপণ্য কিনতে বাইরে যেতে পারছেন বাসিন্দারা।
করোনায় লকডাউন শিথিল করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশটিতে ৪ মে থেকে উৎপাদন শিল্প, নির্মাণ খাত, পাইকারি দোকান পুনরায় চালুর প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে।
তবে আপাতত সীমিত আকারে খোলার জন্য সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষ করে জনসমাগম এড়িয়ে চলতে খাবারের হোম ডেলিভারি আরও বৃদ্ধিতে এই শিথিলের ঘোষণা।
এ ছাড়া ১৮ মে থেকে কমার্শিয়ালের কিছু অংশ, প্রদর্শনী, যাদুঘর, প্রশিক্ষণ টিম, ক্রীড়া ক্ষেত্র এবং গ্রন্থাগার খুলে দেয়া হবে। তাছাড়া ১ জুন থেকে রেস্টুরেন্ট, বার, সেলুন, ম্যাসেজ সেন্টার খোলা হবে।
রোববার কিজি ভবনে জাতির উদ্দেশ্যে ও টেলি সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী কোন্তি দ্বিতীয় ধাপে লকডাউন শিথিলের বিষয়ে বিস্তারিত বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবকিছু নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রেখে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি ভালো না হওয়ায় আগামী সেপ্টেম্বরেও স্কুলগুলো খোলা সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি শিথিলের অর্থ এ নয় যে একজন আরেকজনের বাসায় বেড়াতে যাবে। মৃতুরহার শূন্যে আসা এখনই সম্ভব নয়, যতদিন পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হয়। অন্যদিকে মাস্ক পরা বাধ্য করা হয়েছে বাসে, রাস্তাসহ প্রতিটি কর্মস্থলে।
প্রসঙ্গত, সরকার দেশটির নাগরিকদের জন্য প্রথম থেকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা দিয়ে আসছেন। প্রথম ধাপে ৬০০ ও ৩০০ ইউরো দেন ভিন্ন দুটি বোনাসের মাধ্যমে যারা ইতোমধ্যে বেকার আছেন তাদের। এরপর বাসা ভাড়ার (বোনুস আফিত্তো) জন্য ৪০ ভাগ সহযোগিতা চলমান রয়েছে।
ইতালিতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে মারা গেছেন ২৬ হাজার ৬৪৪ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৭৫ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৬৪ হাজার ৯২৮ জন।
জেডএ/জেআইএম