ডায়রিয়াও হতে পারে করোনার অন্যতম উপসর্গ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:২৯ এএম, ০৩ মে ২০২০

জ্বর, শুকনো কাশি, শ্বাসকষ্ট, গা-হাত-পা ব্যথা ইত্যাদি নেই মানেই করোনা নেই, এমন কিন্তু নাও হতে পারে। চীনের বিজ্ঞানীদের গবেষণা থেকে জানা গেছে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে পেটের সমস্যাও হতে পারে রোগের একমাত্র উপসর্গ। কারণ এসিই-২ নামে যে রিসেপটরের মাধ্যমে করোনার সংক্রমণ হয় তার প্রাচুর্য শ্বাসনালী ছাড়াও রয়েছে পাকস্থলী ও অন্ত্রতেও।

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথম দিকে জ্বর-কাশির বদলে ডায়রিয়া উপসর্গ নিয়ে অনেকে হাসপাতালে ভর্তি হলেও তারা যে করোনায় আক্রান্ত এটা শনাক্ত করার কোনো উপায় ছিল না। কিন্তু অনেক পরে বোঝা গেছে যে, করোনা আক্রান্ত রোগীর ডায়রিয়াও হতে পারে অন্যতম উপসর্গ।

কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মাসখানেক শয্যাশায়ী ছিলেন লেখক ও ইতিহাসবিদ ফার্ন রিডেল। তবে তিনি যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তা বুঝতেই অনেকদিন লেগে গেছে। কারণ প্রথম দিকে তার ছিল ডায়রিয়া, বমি ও পেটব্যথার মতো উপসর্গ। কিন্তু কিছুদিন পর জানা গেলে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তারপর ২৬ দিনের মাথায় সেরে উঠলেন।

এটাকে বলা হচ্ছে গ্যাস্ট্রো করোনা। ফুসফুসে ঢোকা জীবাণু বেরিয়ে গেলেও পেটে ঢুকলে ভাইরাসটি দ্রুত নির্মুল হয় না। করোনার সংক্রমণ যখন পাকস্থলিতে হয় তখন তাকে বলা হয় গ্যাস্ট্রো করোনা। উহানের ইউনিয়ন হাসপাতাল ও টাঙ্গি মেডিকেল কলেজের বিজ্ঞানীর জানিয়েছেন, অনেক সময়েই করোনা সংক্রমণ পাকস্থলিতেও হতে পারে।

তারা বলছেন, এটা হলে ডায়রিয়া, পেট ব্যথা ও বমির ক্লান্তি, গা-হাত-পা ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। এসব রোগীর রোগ নির্ণয় হতে হতে বেশ খানিকটা সময় পার হয়ে যায়। কারণ অনেকে বুঝতেই পারে না তিনি আক্রান্ত। তবে গ্যাস্ট্রো করোনার সুবিধা হলো; এক্ষেত্রে সংক্রমণের প্রকোপ কম থাকে। তবে ভোগান্তির সময়কাল থাকে অনেক বেশি।

নিউইয়র্কের লেনক্স হিল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিসিন বিভাড়ের চিকিৎসক রবার্ট গ্ল্যাটার বলছেন, ‘অনেকের ক্ষেত্রে পেটের সমস্যার মাধ্যমে রোগের সূত্রপাত হলেও পরে একে একে অন্য উপসর্গগুলোও দেখা দেয়। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য এটাই থেকে যায় মূল উপসর্গ হিসেবে।’

নিউইয়র্কের একদল গবেষক ২০৬ জন কোভিড-১৯ রোগীর ওপর সমীক্ষা করে দেখেছেন, ‘তাদের মধ্যে ৪৮ জনের শুধু ডায়রিয়ার মতো পাকস্থলীর সমস্যায় ভুগছিলেন। এছাড়া ৬৯ জনের পেটের সমস্যা দিয়ে শুরু হলেও পরে কাশি, শ্বাসকষ্ট ও জ্বরের মতো উপসর্গগুলো দেখা দেয়। আর ৮৯ জনের ছিল প্রচলিত উপসর্গই—কাশি, শ্বাসকষ্ট, জ্বর।

গুরুতর অসুস্থ রোগীদের মল পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তাতে ভাইরাসের উপস্থিতি রয়েছে এবং তা সংক্রমণ ঘটাতে পারে। পানিবাহিত হয়ে খাবারে মিশলে সেই খাবার খেলে ও সেই জলে বাসনপত্র পরিষ্কার করা হলে সমস্যা হতে পারে বলে জানিয়েছেন চীনের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এর বিজ্ঞানীরা।

এসএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।