চীন চেয়েছিল মহামারির সতর্কতা দেরিতে আসুক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:১৭ পিএম, ১০ মে ২০২০

মহামারি করোনা নিয়ে তথ্য গোপন করতে চেয়েছিল চীন। সে কারণে দেশটির প্রেসিডেন্ট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেছিলেন। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে আহ্বান জানিয়েছিলেন যেন, বৈশ্বিক মহামারি সতর্কতা আরও দেরিতে জারি করা হয় এবং মানুষ থেকে মানুষে করোনার সংক্রমণের বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করা না হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে এই বিস্ফোরক তথ্য সামনে এসেছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জানুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানমের সঙ্গে আলাপকালে শি জিনপিং তাকে ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করেছিলেন যেন তখনই বৈশ্বিক মহামারি সতর্কতা জারি করা না হয়।

জার্মানির ডের স্পিজেল সাময়িকীতে দেশটির ফেডারেল ইন্টিলিজেন্স সার্ভিসের গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে চীন সম্পর্কে এমন বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

ওই সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত ২১ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানের সঙ্গে আলাপ করেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সে সময়ই তিনি করোনা নিয়ে এসব তথ্য তখনই যেন প্রকাশ না করা হয় সেজন্য অনুরোধ করেছিলেন।

এমন বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসতেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকে এক বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। সেখানে এ ধরনের তথ্যকে ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, ড. তেদ্রোস এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে গত ২১ জানুয়ারি কোনো কথাই হয়নি। এমনকি এখন পর্যন্ত তারা কখনও ফোনেও কথা বলেননি।

china-2.jpg

সেখানে আরও বলা হয়েছে যে, এ ধরনের তথ্য বিভ্রান্তিকর এবং তা কোভিড-১৯ মহামারি নিয়ন্ত্রণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিভিন্ন দেশের প্রচেষ্টা থেকে মানুষের দৃষ্টি সরিয়ে দিতে চাচ্ছে।

সেখানে বলা হচ্ছে, গত ২০ জানুয়ারি মানুষ থেকে মানুষে করোনার সংক্রণের বিষয়টি নিশ্চিত করে চীন। এরপরেই সব ধরনের তথ্য সংগ্রহের পর গত ২২ জানুয়ারি এ বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সে সময় জানানো হয় যে, উহানে মানুষ থেকে মানুষে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে।

যদি চীনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি সত্যি হয় তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথা সত্যি প্রমাণিত হবে। এর আগে তিনি বলেছিলেন যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীন-কেন্দ্রিক।

গত এপ্রিলে ট্রাম্প প্রশাসন অভিযোগ তোলে যে, চীনের প্রপাগান্ডা ছড়ানোতে একটি ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সে সময় সংস্থাটিকে অর্থ সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

গত সপ্তাহেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সমালোচনা করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যা বলেছে তা ছিল মিথ্যা। সংস্থাটি আসলে চীন-কেন্দ্রীক বলে উল্লেখ করেন তিনি।

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের ২১২টি দেশ ও অঞ্চলে এই ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে।

টিটিএন/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।