এগিয়ে এল না ছেলেও, হিন্দু বৃদ্ধের শেষকৃত্য করলেন মুসলিমরা
করোনাভাইরাস মহামারি মানবসভ্যতার অমানবিকতার গল্পগুলো প্রতিনিয়ত বিশ্ববাসীর সামনে হাজির করছে। আপনজনও মুহূর্তের মধ্যে যেন অচেনা হয়ে যাচ্ছে। এতদিন ধরে যাকে সবচেয়ে কাছের মানুষ হিসেবে মনে করতেন, সেই প্রিয় মানুষটি তার মৃত্যুর পর দেখা করতেও অস্বীকার করেন।
এমনই এক ঘটনা ঘটেছে ভারতের মহারাষ্ট্রের আকোলা জেলায়। আকোলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৭৮ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ মারা যান। করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তার স্ত্রীও। বাবার মরদেহ নেয়া তো দূরের কথা শেষকৃত্য সম্পন্ন করতেও অস্বীকার করেন ওই বৃদ্ধের ছেলে। তিনি বর্তমানে নাগপুরে থাকেন।
নিজের ছেলে যখন বাবার মরদেহ নিতে অস্বীকার করলে তখন ওই বৃদ্ধের শেষকৃত্যের সব দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে একটি মুসলিম সংগঠন। এমন পরিস্থিতিতে ধর্মনিরপেক্ষতার এক বড় উদাহরণ আকোলা জেলার এই সংগঠন। মুসলিম এই সংগঠনের প্রেসিডেন্ট জায়েদ জাকারিয়া বলেন, জেলায় এমন মারণ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির পরই তারা ঠিক করেন জীবন বাজি রেখে মৃতদেহ সংকারের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। মৃতের ধর্ম না দেখেই এ মহত্কাজে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আকোলা কাচ্চি মেমন জামাত নামে সংগঠনের সদস্যরা।
সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট ভারতীয় একটি গণমাধ্যমকে বলেন, এখন পর্যন্ত ৬০টি মরদেহের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছেন তারা। মৃতদের মধ্যে ২১ জন ছিল করোনায় আক্রান্ত। পাঁচজন ছিলেন হিন্দু। শুধু সংক্রমণের জন্যই নয়, অনেক পরিবার মৃতদেহ শেষকৃত্য করার ক্ষমতা নেই তাদের জন্যও এই সংগঠন পাশে থেকেছে।
আকোলা সরকারি হাসপাতালের স্যানিটেশন বিভাগের প্রধান প্রশান্ত রাজুর কর জানিয়েছেন, সংক্রমণের ভয়েই মৃতের ছেলে শেষকৃত্য করতে অস্বীকার করেন। শেষে স্থানীয় মুসলিম সংগঠনের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেন, নিয়ম মেনে হিন্দু বৃদ্ধের সত্কার তারাই করবেন।
এসআইএস/পিআর