করোনা সংক্রমণের নতুন কেন্দ্র এখন লাতিন আমেরিকা
প্রতিদিন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হিসেবে শনাক্তের সংখ্যায় লাতিন আমেরিকা ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে গেছে। প্যান আমেরিকান হেলথ অর্গানাইজেশনের (পিএএইচও) পরিচালক মঙ্গলবার এমন তথ্য জানিয়ে বলেছেন, নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন কেন্দ্র এখন লাতিন আমেরিকা।
পিএএইচও পরিচালক ডা. ক্যারিসা এটিন্নে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্তের ২৪ লাখই আমেরিকার। এছাড়া এসব আক্রান্তদের মধ্যে ১ লাখ ৪৩ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। তিনি এই অঞ্চলটিকে করোনা প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করেন এ সময়।
তবে সংস্থাটি লাতিন আমেরিকারে সবচেয়ে বড় দেশ ব্রাজিলকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। গত সপ্তাহে দেশটিতে সংক্রমেণের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। প্রথম দিকে তালিকার অনেক নিচে থাকলেও এখন আক্রান্ত হিসেবে শনাক্তের সংখ্যায় শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের পরপরই ব্রাজিলের অবস্থান।
এদিকে পেরু ও চিলিতে সর্বোচ্চ সংখ্যায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হচ্ছে প্রতিদিন। এখনই এসব দেশ থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জারি করা বিভিন্ন বিধিনিষেধ ও সুরক্ষামূলক পদক্ষেপ শিথিল করার সময় আসেনি বলে সতর্ক করেছেন পিএএইচও পরিচালক ক্যারিসা।
শতকরা সংক্রমণের হারে এই দুটি দেশের অবস্থান এখন শীর্ষে। এই তথ্য জানাচ্ছে আওয়ার ওয়ার্ল্ড ইন ডাটা (ওডব্লিউআইডি)। এটা মূলত পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করা স্বাধীন একটি ওয়েবসাইট; যার সদর দফতর যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে।
প্রাদুর্ভাব শুরুর পর চিলিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৭ হাজার ৯৬১ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৮০৬ জন মারা গেছে। মাঝারি আকারে উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর সোমবার পরীক্ষা শেষে জানা যায় দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী জুয়ান কার্লোস এবং পাবলিক ওয়ার্কস মন্ত্রী আলফ্রেডো মোরেনো করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
গত সপ্তাহে রাশিয়াকে টপকে বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দেশ হিসেবে নাম লেখায় ব্রাজিলে। অথচ দেশটিতে সংক্রমণ শুরু হয়েছিল অনেক পরে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, সেখানে এখন আক্রান্ত ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫০৭। আক্রান্তদের মধ্যে ২৪ হাজার ৫৯৩ জন মারা গেছে।
পিএএইচও পরিচালক ডা. ক্যারিসা এটিন্নে বলছেন, ‘এখন সজাগ ও সতর্ক থাকার সময়। স্বাস্থ্য সুরক্ষা পদক্ষেপগুলো কঠোরভাবে কার্যকর করতে হবে। আমরা বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল থেকে এটা শিখতে পেরেছি যে, কোনটা আসলে কাজ করে কোনটা করে না। আমাদের প্রেক্ষিত বিবেচনায় তার প্রয়োগ করতে হবে।’
এদিকে আজ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভালুয়েশন (আইএইচএমই) এক বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানিয়েছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে ব্রাজিলে মৃতের সংখ্যা ছাড়াতে পারে এক লাখ ২৫ হাজারের বেশি। যা সর্বোচ্চ ২ লাখ ২১ হাজার ছাড়াতে পারে।
এসএ