চীনের সেই হিরো চিকিৎসকের সহকর্মীরও করোনায় মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:১৬ পিএম, ০২ জুন ২০২০

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিষয়ে অন্যদের প্রথম সতর্ক করার চেষ্টা করার পর চীনের উহানের চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াং শেষ পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েই প্রাণ হারিয়েছিলেন। এবার তারই এক সহকর্মী কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন। কয়েক সপ্তাহ পর চীনে করোনায় এটিই প্রথম মৃত্যু।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়ে বলেছে, উহান সেন্ট্রাল হাসপাতালের ওই চিকিৎসকের নাম হু ওয়েইফেং। চার মাস ধরে কোভিড-১৯ এর চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তিনি। অবশেষে গত শুক্রবার ইউরোলোজিস্ট এই চিকিৎসক মারা গেছেন।

উহান সেন্ট্রাল হাসপাতালে ষষ্ঠ চিকিৎসক হিসেবে করোনায় প্রাণ হারালেন হু ওয়েইফেং। গত বছর অর্থাৎ ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ হুবেইয়ের রাজধানী শহর উহান থেকেই এই ভাইরাস বিশ্বের প্রতিটি দেশে ছড়ানোর পর ৩ লাখ ৮০ হাজারের মতো মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।

প্রাদুর্ভাব শুরুর পর গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি চীনে করোনার সংক্রমণ সর্বোচ্চ আকার ধারণ করে। তবে এরপর ভাইরাসটি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসে। ১৪০ কোটিরও বেশি মানুষের দেশ চীনে সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যা ঠেকে ৪ হাজার ৬৩৪ জনে; যা বিশ্বের কম জনসংখ্যার দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম।

তবে হু ওয়েইফেং এর মৃত্যু নিয়ে উহান সেন্ট্রাল হাসপাতাল এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। ফেব্রুয়ারির শুরুতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় সেখানে ৬৮ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। ওয়েইফেং এর শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল পুরো দেশ।

Wuhan Doctor

লিভার ড্যামেজের কারণে তার ত্বক কালো বর্ণ ধারণ করার ছবি চীনের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর এ নিয়ে দেশজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। তার সহকর্মী ও একই হাসপাতালের আরেক চিকিৎসক শি ফানেরও একই উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। তবে তিনি চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।

করোনাভাইরাস সম্পর্কে প্রথম সতর্কবার্তা দেয়া (হুইসেলব্লোয়ার) চীনা চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াং করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পর তার মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করে গোটা চীনের সাধারণ মানুষ। গত ডিসেম্বরে লি ওয়েনলিয়াং তার সহকর্মীদের একটি সতর্কবার্তা পাঠান।

বার্তায় তিনি তিনি সার্সের (করোনার একটি প্রজাতি) মতো একটি ভাইরাসের কথা জানান। কিন্তু এ জন্য তাকে হেনস্তার শিকার হতে হয়। জননিরাপত্তা ব্যুরো তাকে ডেকে ‘গুজব না ছড়ানোর’ জন্য সতর্ক করে এবং একটি চিঠিতে সই করতে বাধ্য করে, যেখানে তিনি মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়।

গুজব ছড়ানোর অভিযোগে চীন যে আট জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল পুলিশ। আটজনের মধ্যে চিকিৎসক লিও ছিলেন। পরে অবশ্য কর্তৃপক্ষ তার কাছে ক্ষমা চেয়েছে। এছাড়া তার মৃত্যুর পর বিক্ষোভ শুরু হলে বেইজিং কর্তৃপক্ষ তাকে ‘জাতীয় শহীদ’ অভিধায় ভূষিত করে।

এসএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।