করোনা শেষ না হতেই পরবর্তী মহামারির প্রস্তুতি নিতে বললেন মেরকেল

করোনা মহামারির মুখে ইউরোপের দিশেহারা অবস্থার প্রেক্ষাপটে আত্মসমালোচনার পথে এগোলেন ছয়টি দেশের নেতারা। ভুলত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে মহামারির জন্য আরও ভালো প্রস্তুতির ডাক দিয়েছেন তারা।
ইউরোপ করোনা সংকট আপাতত কিছুটা সামলে নিলেও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই মহামারি এখনো মারাত্মক ক্ষতি করে চলছে। পরিস্থিতি সামলাতে এখনো কোনও ওষুধ বা টিকা আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যেই পরবর্তী মহামারির প্রস্তুতির আহ্বান জানালেন জার্মান চ্যান্সেলর আঞ্জেলা মেরকেল, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরও চারটি দেশের নেতা।
করোনা সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রে নিজস্ব প্রস্তুতি যথেষ্ট জোরদার ছিল না; এ কথা কার্যত মেনে নিয়ে তারা ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি সামলাতে আরও পদক্ষেপ নিতে চান। জার্মানি ও ফ্রান্স ছাড়াও স্পেন, পোল্যান্ড, বেলজিয়াম ও ডেনমার্কের নেতারা ইইউ পর্যায়ে জোরালো প্রস্তুতির ডাক দিয়েছেন।
ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েনকে লেখা একটি যৌথ চিঠিতে মহামারি মোকাবিলার প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আরও সক্রিয় ভূমিকার দাবি জানিয়েছেন। করোনা মহামারির প্রথম পর্যায়ে ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলো মরিয়া হয়ে বিচ্ছিন্নভাবে জাতীয় পর্যায়ে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছিল। সীমান্ত বন্ধ করে, চিকিৎসা সরঞ্জাম মজুদ করে এবং বিপুল পরিমাণ সরকারি ব্যয়ের ঘোষণা দিয়ে একাধিক ইইউ বিধি লঙ্ঘন করেছিল। সেসময় ব্রাসেলসের ছত্রছায়ায় কোনোরকম পারস্পরিক সমন্বয় ছাড়াই সব দেশ ‘একলা চলো’ নীতি অনুসরণ করে।
ভবিষ্যতে আবার এমন সংকট দেখা দিলে সেই ‘ত্রুটি’ এড়াতে চান ইউরোপের শক্তিশালী দেশগুলোর নেতারা। তাই বর্তমান দুর্বলতা ভালোভাবে বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতের জন্য জোরালো প্রস্তুতির প্রয়োজন বলে তারা মনে করেন। বিশেষ করে সংকটের সময়ে ইউরোপে জরুরি ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব নিয়ে তারা মোটেই সন্তুষ্ট নন।
করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পরও ইইউ দেশগুলোর মধ্যে সংক্রমণ সংক্রান্ত তথ্য আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা গেছে। ইইউ-র ছায়া থেকে এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের মধ্যে অসঙ্গতি দূর করার ওপর জোর দিয়েছেন ছয়টি সদস্য দেশের নেতা। এ প্রসঙ্গে ইউরোপীয় রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ দফতরের হাতে আরও ক্ষমতা তুলে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন মেরকেল, ম্যাক্রোঁ ও অন্যান্য নেতারা।
ওষুধপত্র আমদানির ক্ষেত্রে চীন ও ভারতের মতো দেশের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে অন্যান্য বাজার থেকেও সেসব কেনার ডাক দিয়েছেন তারা। আগামী ১৯ জুন এক ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলনে ইইউ নেতারা করোনা সংকটের প্রভাব নিয়ে আলোচনা করবেন। ডিডব্লিউ।
এসআইএস/পিআর