স্বাধীনতা দিবসেও ‘ভুলভাল বক্তব্য’ ট্রাম্পের
শনিবার ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৪তম স্বাধীনতা দিবস। প্রতিবছরই মহাধুমধামে এ দিনটি উদযাপন করে মার্কিনিরা। এবছর করোনাভাইরাসের কারণে থমকে গেছে সেই আয়োজন। তবে হাল ছাড়েননি ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের সাউথ লনে ছোটখাটো আয়োজনের মাধ্যমে সেরেছেন স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান।
মাথার ওপর যুদ্ধবিমানের মহড়া, প্যারাসুট নিয়ে লাফ, দেশাত্মবোধক সঙ্গীত, খাওয়া-দাওয়া সবই ছিল এদিনের আয়োজনে। শুধু ছিল না পর্যাপ্ত সামাজিক দূরত্ব আর মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বেশিরভাগ অতিথিকেই মাস্কবিহীন অবস্থায় দেখা গেছে। তবে অনুষ্ঠানের সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্য। বরাবরের মতো এদিনও করোনাভাইরাসের ভয়াবহতাকে উপেক্ষা করে অনেকটাই ‘মনগড়া’ বক্তব্য দিযেছেন তিনি।
ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ‘চীন থেকে আসা এক ভাইরাস আঘাত করেছে আমাদের। তবে অনেক উন্নতি করেছি আমরা। আমাদের পরিকল্পনা ঠিকভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা শিখেছি, কীভাবে আগুন নেভাতে হয়।’
যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ২৮ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার। সেখানে গত কয়েকদিন ধরেই দৈনিক নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে ৫০ হাজারেরও বেশি। করোনা মোকাবিলায় নেয়া ব্যবস্থায় অসন্তোষ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সরকারি চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. অ্যান্থনি ফউসি বলেছেন, ‘নিশ্চিতভাবেই আমরা ঠিকপথে এগোচ্ছি না।’
তবে, বিশেষজ্ঞদের এমন মতের সঙ্গে একমত নন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি আগেও দাবি করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রে টেস্ট বেশি হচ্ছে বলেই করোনা রোগীর সংখ্যা বেশি দেখাচ্ছে। স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে আবারও বললেন সেই একই কথা।
তিনি বলেন, ‘আমরা এ পর্যন্ত চার কোটির বেশি মানুষকে পরীক্ষা করেছি। এভাবে আমরা যত আক্রান্ত দেখাচ্ছি, তার মধ্যে ৯৯ শতাংশই ক্ষতিকর নয়। এমন ফলাফল আর কোনও দেশ দেখাতে পারবে না, কারণ আর কোনও দেশ এত পরীক্ষা করছে না।’
তবে, ’৯৯ শতাংশ রোগী ক্ষতিকর নয়’-এমন তথ্য ট্রাম্প কোথায় পেলেন, তা জানা যায়নি।
এদিন, করোনা মহামারির জন্য আবারও চীনের ঘাড়েই দোষ চাপিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘চীনের গোপনীয়তা, ধোঁকাবাজি ও লুকোচুরির কারণে এটি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। ১৮৯টি দেশ এতে আক্রান্ত। এর জন্য চীনকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।’
প্রেসিডেন্টের এ বক্তব্যে অতিথিদের মধ্যে হাততালির বন্যা বয়ে গেলেও চীনের বিরুদ্ধে ঠিক কীভাবে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে তা জানাতে পারেনি হোয়াইট হাউস।
এছাড়া, ডা. ফউসিসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দাবি উড়িয়ে দিয়ে ট্রাম্প জোর গলায় ঘোষণা দিয়েছেন, ‘চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই করোনাভাইরাসের ওষুধ বা প্রতিষেধক চলে আসবে।’ তবে আগামী ৩ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইতিবাচক ফল পাওয়ার আশাতেই কোনও ধরনের প্রমাণ ছাড়া তিনি এমন দাবি করছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
কেএএ/এমএস