নভেম্বরে মানবদেহে ভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালাবে থাইল্যান্ড
করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়েই এক ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। তবে মানবজাতিকে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস থেকে বাঁচাতে ইতোমধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা এর ভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছেন।
এদিকে থাইল্যান্ড জানিয়েছে, তাদের তৈরি একটি ভ্যাকসিন আগামী নভেম্বরেই মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হবে। ইতোমধ্যেই এই ভ্যাকসিনের ১০ হাজার ডোজ তৈরির কাজ শেষ হয়েছে বলে এক শীর্ষ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।
দেশটির ন্যাশনাল ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট, দ্য ডিপার্টমেন্ট অব মেডিক্যাল সায়েন্স এবং চুলালংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা যৌথ প্রচেষ্টায় এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছেন।
ব্যাংককের চুলালংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন উন্নয়ন কর্মসূচির পরিচালক কিয়াত রাক্সরাংথাম বলেছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে পরীক্ষার ফলাফল আশানুরূপ হওয়ায় পরবর্তী ধাপে মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের জন্য আরও কিছু ডোজ তৈরি করা হচ্ছে।
কিয়াত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা প্রথমে এটি জুনে শুরু করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সব কিছুর পরিকল্পনা আসলে এতটা সহজ ছিল না।
এর আগে প্রথম ধাপে ইঁদুরের দেহে এই ভ্যাকসিনের পরীক্ষায় ইতিবাচক ফল আসার পর বানরের শরীরে এর প্রয়োগ শুরু করে থাইল্যান্ড। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ভ্যাকসিন শুধুমাত্র থাইল্যান্ডের মানুষের জন্য নয় বরং তা বিশ্বের সব মানুষকে রক্ষার জন্যই তৈরি করা হচ্ছে।
নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য এই ভ্যাকসিনটির উৎপাদনের জন্য দুটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। ভাইরাসের আরএনএ ব্যবহার করে থাই বিজ্ঞানীদের তৈরিকৃত এই ভ্যাকসিনটি দেহকোষে অ্যান্টিবডি তৈরি করে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করে।
এদিকে, ভ্যাকসিনের দৌঁড়ে এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছে অক্সফোর্ডের তৈরি ভ্যাকসিন। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল চলছে। এরই মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের জন্য একাধিক সংস্থার সঙ্গে চুক্তিও হয়ে গেছে।
আগামী আগস্টের শেষের দিকেই অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের ফলাফল সম্পর্কে জানা যাবে।পরীক্ষায় যদি সফলতার প্রমাণ পাওয়া যায় তবে জরুরিভাবে ব্যবহারের জন্য এই ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়া হবে অর্থাৎ অক্টোবরের মধ্যেই উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা যাবে। এর দামও থাকবে হাতের নাগালের মধ্যেই।
টিটিএন/এমকেএইচ