ভ্যাকসিন আসার আগেই মুনাফার ধান্দায় মার্কিন কোম্পানি মডার্না
অডিও শুনুন
সারাবিশ্বে এখন এক আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে মানবজাতিকে বাঁচাতে ইতোমধ্যেই ভ্যাকসিন তৈরিতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা।
এর মধ্যেই বেশ কিছু দেশ করোনার সম্ভাব্য ভ্যাকসিন তৈরি করে মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগও শুরু করে দিয়েছে।
এদিকে, করোনার ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে এগিয়ে থাকা চার কোম্পানি অ্যাস্ট্রেজেনেকা, জনসন অ্যান্ড জনসন, মডার্না এবং ফাইজার জানিয়েছে করোনার চিকিৎসায় তাদের ভ্যাকসিন চলতি বছরের শেষে বা ২০২১ সালের শুরুতেই তৈরি হয়ে যাবে।
এই চার কোম্পানিই মানবদেহে তাদের তৈরি করোনার সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করেছে। তবে করোনার ভ্যাকসিন বাজারে আসার আগেই মুনাফার ধান্দায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মডার্না।
অ্যাস্ট্রেজেনেকা, জনসন অ্যান্ড জনসন এবং মডার্না যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের কাছ থেকে ভ্যাকসিন তৈরিতে অনুদান পাচ্ছে।
অ্যাস্ট্রেজেনেকা এবং জনসন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তারা কয়েক লাখ ডোজ ভ্যাকসিন তৈরি করবে এবং তারা এই ভ্যাকসিনে কোনো মুনাফা করবে না।
মডার্না মার্কিন সরকারের কাছ থেকে ৪৮৩ মিলিয়ন ডলার অনুদান পাচ্ছে। কিন্তু তারা মুনাফা না করার কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি। বরং প্রতিষ্ঠানটির প্রেসিডেন্ট ডা. স্টিফেন হগ জানিয়েছেন যে, তারা উৎপাদিত মূল্যে এই ভ্যাকসিন বাজারজাত করবে না।
এদিকে, সরকারি অনুদান নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ফাইজার। এ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভ্যাকসিনের মূল্য নিজেদের ইচ্ছামতো বসানোর জন্যই সরকারের কাছ থেকে অনুদান নিতে চাচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি।
এখনও পর্যন্ত করোনার চূড়ান্ত ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ চলছে। তাই ভ্যাকসিন তৈরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখনই বলা যাচ্ছে না যে, কোন প্রতিষ্ঠান তাদের ভ্যাকসিনের দাম কেমন রাখবে। এর জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
জাতিসংঘের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি করতে ১৭৩টি উদ্যোগ চলমান রয়েছে। এরমধ্যে ১৪০টি এখনও মানবদেহে পরীক্ষা শুরু হয়নি। একে বলা হয় প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। বিজ্ঞানীরা এখনও এসব টিকা নিয়ে গবেষণা করছেন, পশু বা প্রাণীর দেহে প্রয়োগ করে কার্যকারিতা যাচাই করছেন।
১৯টি টিকার কার্যক্রম রয়েছে প্রথম পর্যায়ে অর্থাৎ ক্লিনিক্যাল টেস্টিং শুরু হয়েছে। এর ফলে মানুষের ছোট একটি গ্রুপের ওপর টিকাটি প্রয়োগ করে দেখা হয় যে, এটা নিরাপদ কিনা। সেই সঙ্গে এটা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় কতটা প্রভাব ফেলে, তাও যাচাই করা হয়।
১১টি টিকা রয়েছে দ্বিতীয় পর্যায়ে, যেখানে এসব টিকা কতটা নিরাপদ, তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। এই পর্যায়ে কয়েকশো মানুষের ওপর টিকার পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা এর নিরাপত্তা আর সঠিক মাত্রা নিরূপণের চেষ্টা করেন।
বিবিসি বলছে, বিশ্বে এখন তিনটি ভ্যাকসিন তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা শুরুর পর্যায়ে রয়েছে। এই পর্যায়ে কয়েক হাজার মানুষের ওপর টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখা হয় যে, সেটা কতটা নিরাপদ, কতটা কার্যকর, বড় ধরনের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি হয় কিনা। এখানে সফলতা পেলেই সাধারণত টিকার অনুমোদন হয়ে থাকে।
টিটিএন