লাখের বেশি মৃত্যু তবুও বোলসোনারোর পক্ষেই অর্ধেক মানুষ
লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে ভয়াবহ তাণ্ডব চালাচ্ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। ইতোমধ্যেই ব্রাজিল, মেক্সিকো, পেরু, চিলি-সহ লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
তবে করোনায় এখন পর্যন্ত লাতিন আমেরিকায় শীর্ষে রয়েছে ব্রাজিল। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ এবং মৃত্যুও ব্রাজিলে। দেশটিতে সংক্রমণ দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ার পেছনে প্রথম থেকেই বোলসোনারো সরকারের অদক্ষতা এবং করোনা নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়াকেই দায়ী করা হচ্ছে।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের এক জরিপ বলছে ভিন্ন কথা। নতুন ওই জরিপ অনুযায়ী, করোনা পরিস্থিতির জন্য ব্রাজিলের অর্ধেক মানুষই প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারোকে দোষী মনে করেন না। তাদের মতে, করোনা পরিস্থিতির জন্য বোলসোনারোকে দায়ী করা উচিত নয়।
প্রায় অর্ধেক ব্রাজিলিয়ানই মনে করেন যে, দেশটিতে করোনায় এক লাখের বেশি মৃত্যুর ঘটনায় জেইর বোলসোনারোর কোনো দায়বদ্ধতা নেই। সাম্প্রতিক সময়ে ডেটাফোলহা জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। শনিবার ব্রাজিলের ফোলহা ডে সাও পাওলো পত্রিকায় ওই জরিপ প্রকাশিত হয়েছে।
বিশ্বে করোনায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু দেখেছে ব্রাজিল। ফোলহা ডে সাও পাওলো পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ৪৭ শতাংশ ব্রাজিলিয়ান দেশটিতে করোনায় মৃত্যুর ঘটনায় বোলসোনারোকে কোনো দোষ দিচ্ছে না। অপরদিকে ১১ শতাংশ তাকে এজন্য দায়ী করছে।
এখন পর্যন্ত করোনায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র। এরপরেই সংক্রমণে ব্রাজিল এগিয়ে। করোনা মহামারিতে বোলেসোনারো সরকার বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সমালোচনার শিকার হচ্ছেন। কারণ প্রথম থেকেই তারা এ বিষয়ে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
ডানপন্থি এই নেতা শুরু থেকেই এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের চিকিৎসায় ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারের পক্ষে সাফাই গেয়ে আসছেন। তার এজেন্ডার বাইরে যাওয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়েছেন তিনি। এমনকি তিনি দেশজুড়ে লোকজনকে লকডাউনের বিপক্ষে অবস্থানের জন্য উৎসাহ দিয়েও গেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে বোলসোনারো নিজে এবং তার পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্যও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যদিও তিনি করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তার স্ত্রী ফার্স্ট লেডি মিশেল বোলসোনারো গত জুলাইতে করোনায় আক্রান্ত হন। চলতি সপ্তাহে তার দাদি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি বেশ কিছুদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৩২ লাখ ৭৫ হাজার ৫২০ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ১ লাখ ৬ হাজার ৫২৩ জন।
ডেটাফোলফা গত ১১-১২ আগস্ট ২ হাজার ৬৫ জনের ওপর জরিপ চালায়। সেখানেই বোলসোনারোর প্রতি অধিকাংশ মানুষ তাদের সমর্থন জানিয়েছেন।
টিটিএন/এমএস