কানাডায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, সংস্পর্শ কমানোর অনুরোধ ট্রুডোর
কানাডায় শুরু হয়েছে করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ। বর্তমানে সেখানে দৈনিক পাঁচ হাজারের কম নতুন রোগী শনাক্ত হলেও চলতি বছরের শেষ নাগাদ তা দৈনিক ২০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। আর পরিস্থিতি আরও নাজুক হলে দৈনিক ৬০ হাজার নতুন রোগী দেখতে হতে পারে দেশটিকে। শুক্রবার কানাডার শীর্ষ জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. থেরেসা ট্যাম আশঙ্কাজনক এ তথ্য জানিয়েছেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির বর্তমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বিষয়ে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চল, কিছু শহরে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাপক চাপ অনুভব করছে। এটা যদি এখনই যদি ঘটতে থাকে,তাহলে ভাবুন, এসব ক্লান্ত স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা [সংক্রমণের তীব্রতা বাড়লে] মোকাবিলা করতে পারবেন না।
কানাডায় গত কয়েকদিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশ কয়েকটি প্রদেশে আবারও চলাচল ও ব্যবসা-বাণিজ্যে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। উদ্ভূত এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশবাসীকে শারীরিক সংস্পর্শ সীমিত করার আহ্বান জানিয়েছেন কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
শুক্রবার নিজ বাসভবন থেকে রাখা এক বক্তব্যে তিনি বলেছেন, আমাদের জনস্বাস্থ্যের নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হবে। ইচ্ছামতো যোগাযোগ কমাতে হবে। আমরা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছি, যেখানে কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব থামাতে কয়েক সপ্তাহ অবরুদ্ধ রাখার বিষয়গুলো আরও জোরদার করতে হবে।
কানাডীয় প্রধানমন্ত্রী জানান, গত কয়েক সপ্তাহে অন্টারিও, ম্যানিটোবা, সাসকাচেয়ান, আলবারতা প্রদেশ এবং উত্তরাঞ্চলীয় নুনাভাটে ব্যাপক হারে সংক্রমণ বেড়েছে। সংক্রমণ প্রতিরোধে নুনাভাট অঞ্চলটিতে দুই সপ্তাহের লকডাউন জারি করা হয়েছে।
এদিন করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে প্রায় একবছর ধরে লড়তে থাকা চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের দুরবস্থা প্রসঙ্গেও কথা বলেন ট্রুডো।
তিনি বলেছেন, প্রায় ১০ মাস ধরে তারা সম্মুখভাবে রয়েছেন। তারা নায়ক। তারা যাতে রাজি হয়েছেন ভেবেছিলেন, সেধরনের যে কোনও বিষয়কে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। তাদের সহায়তা করা দরকার। তাদের একটা বিরতি দেয়া দরকার। এই সংক্রমণ বন্ধ করতে হবে।
কানাডার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, চলতি মাস শেষে দেশটিতে করোনায় মৃত্যু ১১ হাজার ৮৭০ থেকে ১২ হাজার ১২০ জনের মধ্যে থাকতে পারে। আর আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছাতে পারে ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৫০০ থেকে ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৬০০ জনের মধ্যে।
সরকারি হিসাব অনুসারে, কানাডায় এপর্যন্ত প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ১৫ হাজার ৭৫১ জন। মারা গেছেন অন্তত ১১ হাজার ২৬৫ জন।
সূত্র: আল জাজিরা
কেএএ/