মিয়ানমারে বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে নিহত ৭

মিয়ানমারে রোববার বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে অন্তত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এদিন সকাল থেকেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজপথ। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হটাতে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েছে এবং জলকামান নিক্ষেপ করেছে। রাজনৈতিক, মেডিক্যাল সূত্র ও গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
স্থানীয় গণমাধ্যম মিয়ানমার নাউ একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। ওই ভিডিওতে হ্লেদান সেন্টারের কাছে রাস্তার ওপর একজনকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। পুলিশের ছোড়া গুলি তার বুকে এসে লেগেছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী ফ্রন্টিয়ার ম্যাগাজিনকে জানিয়েছেন, একটি বাস স্টেশনে আশ্রয় নেয়া বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ছুড়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় একজন নিহত এবং আরও একজন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
দক্ষিণাঞ্চলীয় দাওয়েই এলাকার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সেখানে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি ছুড়লে একজন নিহত এবং আরও ডজনখানেক আহত হয়েছে। কিয়াও মিন হাইক নামের এক রাজনীতিবিদ রয়টার্সকে ওই বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মিয়ানমারের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে সাহসী বক্তব্য রাখায় বিশেষ দূত কিয়াউ মোয়ে তানকে বহিষ্কার করেছে দেশটির সামরিক সরকার। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বিশ্বাসঘাতকতার জন্য তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এরপরেই রোববার বিক্ষোভে কঠোর অবস্থান নেয় পুলিশ।
সংস্থাটির এক অধিবেশনে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন কিয়াউ মোয়ে তান। সাহসী এই দূত জাতিসংঘের কাছে আহ্বান জানান যে, তার দেশে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে সংস্থাটি যেন প্রয়োজনীয় যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে। স্বদেশের শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একজন রাষ্ট্রদূতের এমন অবস্থানকে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেন বিশ্লেষকরা।
তিনি সামরিক সরকারকে উৎখাতের আহ্বান জানিয়েছিলেন। এক আবেগঘন বক্তব্যে তিনি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত কোনো দেশেরই মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে সহযোগিতা করা উচিত নয় বলে উল্লেখ করেন।
Video: Soldiers gunned down a few protesters in Yangon crackdown on Sunday pic.twitter.com/uwifk4ty1p
— Myanmar Now (@Myanmar_Now_Eng) February 28, 2021
চলতি মাসের ১ তারিখে মিয়ানমারে বেসামরিক সরকারকে সরিয়ে দিয়ে দেশটির ক্ষমতা গ্রহণ করে সামরিক বাহিনী। তারপর থেকেই সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
আকস্মিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের ক্ষমতা গ্রহণ করায় শুরু থেকেই দেশটির সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনা করে আসছে। সীমিত পরিসরে অনেক দেশ মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে।
ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় রোববার সকালে মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরুর পরই সেখানে সহিংসতা শুরু হয়। পুলিশ বাধা দেয়ায় বিক্ষোভকারীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। মিয়ানমার নাউ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, একটি স্কুলের এক শিক্ষিকা পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন। তারা অবস্থা এখন কেমন তা জানা যায়নি।
টিটিএন/জিকেএস