আইনজীবীদের সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা ঋণ দেবে সুপ্রিম কোর্ট বার
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশের সংকটময় পরিস্থিতিতে ঋণের জন্য আবেদনকারী সদস্যদের সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা ঋণ দেবে। রোববার (৩ মে) এ সিদ্ধান্তের কথা সবাইকে জানিয়েছেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
তিনি জানান, ২০০০ সাল বা তার আগে সমিতিতে তালিকাভুক্ত সদস্যদের এককালীন ৭৫ হাজার টাকা, ২০০১ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকা, ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৪০ হাজার টাকা এবং ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তালিকাভুক্ত সদস্যদের এককালীন ৩০ হাজার টাকা সুদমুক্ত ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
ঋণ গ্রহণকারী সদস্যরা পাঁচ কিস্তিতে (২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত) ঋণ শোধ করবেন। কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হলে মোট ঋণের ওপর নয় শতাংশ হারে অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করতে হবে। আর ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সমুদয় অর্থ পরিশোধ করা না হলে তার সদস্যপদ স্থগিত করা হবে বলে জানান রুহুল কুদ্দুস কাজল।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে নিজেদের সদস্যদের ঋণ দেয়ার জন্য ১৫ এপ্রিল সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। এ আবেদনের সময়সীমা ছিল ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত। প্রায় ১০ হাজার সদস্যের মধ্যে দুই হাজার ৮০০ এর মতো সদস্য এ ঋণের জন্য আবেদন করেছেন।
করোনাভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকারি আদেশের সঙ্গে মিল রেখে আদালত অঙ্গনও বন্ধ রয়েছে। কেবল জরুরি প্রয়োজনে প্রত্যেক জেলায় একটি করে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট খোলা রয়েছে। এ অবস্থায় সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি আমিন উদ্দিন ও সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল স্বল্প পরিসরে কোর্ট চালু করতে প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করেন। এছাড়া একাধিক সমিতিসহ কয়েকজন আইনজীবী প্রধান বিচারপতি বরাবর সীমিত পরিসরে কোর্ট খুলতে আবেদন করেন।
এরপর গত ২৩ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, এ পরিস্থিতিতে কঠোর সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অতীব জরুরি বিষয়গুলো শুনানির নিমিত্তে ছুটিকালীন সময়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে বসবেন।
এছাড়া ছুটিকালীন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান অতীব জরুরি বিষয়গুলো শুনানির নিমিত্তে হাইকোর্ট বিভাগের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। অপর বিজ্ঞপ্তিতে সপ্তাহে দুইদিন জজ কোর্টও খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়।
এ দুই বিজ্ঞপ্তি জারির পর আইনজীবীরা কোর্ট চালু না করতে আবেদন জানান। এর প্রেক্ষিতে ২৫ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট চালুর সিদ্ধান্ত ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করা হয়।
পাশাপাশি সপ্তাহে দুইদিন জজ কোর্ট খোলার বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতাও পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। পরে ২৬ এপ্রিল ফুল কোর্ট সভায় সিদ্ধান্ত হয় সাধারণ ছুটিতে ৫ মে পর্যন্ত কোর্ট খোলার বিজ্ঞপ্তি স্থগিত থাকবে।
এফএইচ/এমএফ/এমএস