ভার্চুয়াল কোর্ট নিয়ে আইনজীবীদের ফেসবুকে কিছু না লেখার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫০ পিএম, ০২ জুন ২০২০
ফাইল ছবি

করোনাকালীন ভার্চুয়াল কোর্ট ব্যবস্থাপনায় মামলার কার্যতালিকা (কজ লিস্ট) নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ফেসবুকে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে স্ট্যাটাস এবং মন্তব্য না করার জন্য আইনজীবীদের সতর্ক করে নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। এসব স্ট্যাটাস থেকে বিরত থাকার হুঁশিয়ারি দিয়ে সাবধান করেছেন আদালত।

আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ডক্টর মুহাম্মদ বশির উল্লাহ।

আইনজীবী বলেন, মামলা কজলিস্টে আসবে কি না, কার আবেদন আগে এলে কারটা পরে আসবে এমন মন্তব্য থেকে বিরত রাখতে নোটিশ আকারে জানানোর জন্যে ব্যবস্থা নিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদককে বলা হয়েছে।

এর আগে তাদের এ বিষয়ে শুনানি করার জন্য ভার্চুয়াল আদালতে ডাকেন সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক।

তিনি জানান, মঙ্গলবার (২ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের ভার্চুয়াল বেঞ্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন ও সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলের ভর্চুয়াল উপস্থিতিতে এসব নির্দেশনা দেন।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ডক্টর মুহাম্মদ বশির উল্লাহ আরও বলেন, হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের বেঞ্চে ১,৭০০ আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে যেসব আইনজীবী আবেদন করেছেন তাদের সুপ্রিম কোর্টের পরিচিতি নম্বর (এনআইডি) এবং মোবাইল নম্বরসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য না দিয়ে অনলাইনে মেইল পাঠিয়ে দেন। এতে কী বিষয়ে আবেদন এবং কোন আইনজীবী শুনানি করবেন বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। আর ভার্চুয়ালে দিনে ৫০ থেকে ৬০টি আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। চাইলেও এর চেয়ে বেশি আবেদনের শুনানি করা সম্ভব হয় না।

তিনি বলেন, মামলা কললিস্টে আসা না আসার এসব বিষয়কে সামনে নিয়ে অনেক আইনজীবী তাদের সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে সংশ্লিষ্ট কোর্টের বেঞ্চ অফিসারের সঙ্গে আইনজীবীর সম্পর্ক এবং বিচারকের সাথে সম্পর্ক রয়েছে বলেই মামলা শুনানির জন্য এসেছে বলে মন্তব্য করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদককে ডেকে এসব নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।

ভার্চুয়াল কোর্টে অংশগ্রহকারী আইনজীবীদের মাধ্যমে বিশেষ বার্তায় আদালত তার নির্দেশনায় বলেন-

ক.মামলা ফাইলিংয়ের সময় লিখিত আন্ডারটেকিং এবং সিগনেচার অবশ্যই দিতে হবে। সঙ্গে ইমেইল ও বারের (সমিতির) সদস্য নম্বর উল্লেখ করতে হবে। কেননা, অনেক আবেদনে এসব তথ্য না থাকায় মামলা লিস্টে আসছে না।

খ. ভার্চুয়াল কোর্টে মামলা লিস্টে আসা বা না আসা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ফেসবুকে বিভ্রান্তিকর ও তথ্যবিহীন স্ট্যাটাস এবং মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্ক থাকতে হবে।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দস কাজল বলেন, ভার্চুয়াল কোর্টের কার্যক্রম নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য প্রসঙ্গে হাইকোর্ট সমিতির সভাপতি-সম্পাদককে ডেকে একটি নির্দেশনা প্রদান করেন। এতে বলা হয়, ভার্চুয়াল কোর্টের কার্যক্রম নিয়ে ফেসবুকে কোনোপ্রকার পোস্ট এবং মন্তব্য করা যাবে না।

আদালতের নির্দেশের পর মঙ্গলবার বিকেলে সমিতির পক্ষ থেকে সব সদস্যকে এ নির্দেশনার বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ এপ্রিল করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি এবং দেশজুড়ে সাধারণ ছুটি থাকায় আদালত ব্যবস্থা বন্ধ রেখে ভার্চুয়াল কোর্ট চালুর উদ্যোগ নেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধান বিচারপতি মামলা শুনানির জন্য বেশ কয়েকটি বেঞ্চ গঠন করে দেন।

এফএইচ/জেডএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।