পরীক্ষা ছাড়াই সনদের দাবিতে শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের সমাবেশ রোববার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:৪৪ এএম, ১৮ জুলাই ২০২০

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের লিখিত ও ভাইভা গ্রহণ না করে আইনজীবী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে গেজেট প্রকাশের দাবিতে রোববার বার কাউন্সিলের সামনে সমাবেশ করবেন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা।

রোববার (১৯ জুলাই )বাংলামোটর বার কাউন্সিলের অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি থেকে সমাবেশের ডাক দেন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা।

এর আগে গত ৭ জুলাই অবস্থান কর্মসূচি থেকে আমরণ অবস্থান কর্মসূচিতে যায় তারা। এর পর আজ সমাবেশের ডাক দেন। গত ৩০ জুন আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক ও সনদদানকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের প্রতি এই আহ্বান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। এর আগে সনদের গেজেট প্রকাশের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী ও বার কাউন্সিলের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা। এরপর গত ৮ জুলাই থেকে দাবি আদায়ে আমরণ অনশনে যান শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা।

জানা গেছে, দীর্ঘ পাঁচ বছরে একটি মাত্র এনরোলমেন্ট পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ায় এবং বর্তমান করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতার কারণে শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বর্তমানে ১২ হাজার ৮৪৮ জন প্রিলিমিনারি উত্তীর্ণ হয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য অপেক্ষায় আছেন। এছাড়াও ৫০ হাজারেরও বেশি শিক্ষানবিশ আইনজীবী পরবর্তী প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য অপেক্ষায় আছেন।

গত ৬ জুন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা ২০১৭ ও ২০২০ সালে এমসিকিউ উত্তীর্ণদের লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষা গ্রহণ না করে সনদ প্রদানের জন্য বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও আইন মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেয়। এরপর গত ৯ জুন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রেরণ করে।

শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা বলেন, আমরা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তকরণ এনরোলমেন্ট প্রক্রিয়ার প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ২০১৭ সালের ২১ জুলাই এবং ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে উত্তীর্ণ হই। দীর্ঘ প্রায় তিন বছর বার কাউন্সিল কর্তৃক এনরোলমেন্ট পরীক্ষা সম্পন্ন না হওয়ায় আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। উচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ২০১৮ ও ২০১৯ সালে কোনো পরীক্ষা হয়নি। তবে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি আইনজীবী তালিকাভুক্তকরণ পরীক্ষার প্রিলিমিনারি সম্পন্ন হওয়ার পর বর্তমান করোনাভাইরাস মহামারির কারণে লিখিত পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে যায়। এ অবস্থায় শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের বিষয় মানবিকভাবে বিবেচনা করে লিখিত পরীক্ষা মওকুফ করে অথবা লিখিত ও ভাইভা উভয় পরীক্ষা মওকুফ করে ২০১৭ ও ২০২০ সালে এমসিকিউ উত্তীর্ণদের গেজেট প্রকাশ করে সনদের প্রদানের জন্য দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে শিক্ষানবিশ আইনজীবী আইনুল ইসলাম বিশাল বলেন, The Bangladesh Legal Practitioners and Bar Council Order, 1972 এর Article 40 (1) এবং 40 (2) (m) অনুযায়ী গেজেট বা প্রজ্ঞাপন দ্বারা ২০১৭ ও ২০২০ সালে প্রিলিমিনারি উর্ত্তীর্ণদের সনদ প্রদান করতে কোনো বাধা নেই। উপরোক্ত দুইটি অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ২০১৭ ও ২০২০ সালে প্রিলিমিনারি উর্ত্তীর্ণ শিক্ষানবিশ আইনজীবীদের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে পারেন।

শিক্ষানবিশ আইনজীবী সুমনা আক্তার লিলি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আইনের ছাত্র ছিলেন, তিনি সারাজীবন মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন। কিন্তু আজ আমরা জাতির পিতার বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করে আমাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত, তিন বছর একটি পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছি।

তিনি বলেন, বার কাউন্সিলের বর্তমান কমিটি যেহেতু এখন পর্যন্ত কোনো এনরোলমেন্ট পরীক্ষা পুরোপুরি সম্পন্ন করতে পারেনি এবং বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে লিখিত পরীক্ষা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অনিশ্চিত সেহেতু ২০১৭ ও ২০২০ সালে প্রিলিমিনারি উত্তীর্ণদের লিখিত ও ভাইভা মওকুফ করে গেজেট প্রকাশ করে ২০২০ সালেই সনদ প্রদান করা হোক। মুজিব শতবর্ষ থেকেই আপিল বিভাগের রায় কার্যকর করা হোক।

এফএইচ/এমএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।