সবার প্রিয় চেয়ারম্যান ছিলেন আতিক উল্ল্যাহ

ঢাকার কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিক উল্ল্যাহ চৌধুরীকে হত্যার পর মরদেহ পোড়ানোর অভিযোগে করা মামলায় সাতজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রায়ের পর্যাবেক্ষণে বিচারক বলেন, আতিক উল্ল্যাহ চৌধুরী এলাকার একজন নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং তার বীরত্বের স্বাক্ষর রাখেন। পরবর্তীতে তিনি এলাকার বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন এবং দেশসেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন তিনি।
তিনি ছিলেন দরিদ্র, নির্বিশেষে সবার জনপ্রিয় চেয়ারম্যান। কর্মকাণ্ডে সততা ও নিষ্ঠার পরিচয় দিয়েছেন আতিক উল্ল্যাহ। এলাকায় তার জনপ্রিয়তা উৎসাহিত হয়ে মামলার আসামি গুলজার হোসেন মেম্বারসহ অন্যরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেন এবং পরবর্তীতে তার মরদেহ পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেন। তাই আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা যুক্তিসঙ্গত বলে মনে করেন বিচারক।
বুধবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকার দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- গুলজার হোসেন,আশিক, শিহাব আহমেদ ওরফে শিবু, আহসানুল কবির ইমন, তাজুল ইসলাম তানু, জাহাঙ্গীর খাঁ ওরফে জাহাঙ্গীর এবং রফিকুল ইসলাম ওরফে আমিন ওরফে টুন্ডা আমিন।
এদিকে মরদেহ পোড়ানোর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাতজনকেই সাত বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত।জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
মরদেহ পোড়ানোর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাতজনকেই সাত বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় শম্পাকে খালাস দিয়েছেন আদালত। মামলার অন্য আসামিরা পলাতক।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আতিক উল্ল্যাহর ছেলে কেরানীগঞ্জের কোন্ডা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘এই রায় যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়, সরকারের কাছে আমার ও কেরানীগঞ্জ বাসীর এই প্রত্যাশা।’
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১০ ডিসেম্বর নিখোঁজ হন কোন্ডা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিক উল্ল্যাহ চৌধুরী। নিখোঁজের পরদিন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর এলাকার একটি হাসপাতালের মরদেহ থেকে তার আগুনে পোড়া বিকৃত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
আসামিরা তাকে হত্যা করে মরদেহ গোপন করার উদ্দেশ্যে পুড়িয়ে ফেলে। পরে তার সঙ্গে থাকা কাগজ ও এটিএম কার্ড দেখে মরদেহ শনাক্ত করেন ছেলে সাইদুর রহমান ফারুক চৌধুরী।
সাইদুর রহমান ফারুক চৌধুরী দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারি ৮জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয় পুলিশ।
২০১৫ সালের ২ জুলাই আটজন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলায় ২১ সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ১১ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
জেএ/এমএসএইচ/এমকেএইচ