এলপিজির দাম নিয়ে গণশুনানির তথ্য দিয়ে পার পেলেন বিইআরসি চেয়ারম্যান

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এলপিজি (সিলিন্ডার) গ্যাসের দাম পুনঃনির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
এদিকে, আগামী তিন মাসের মধ্যে (অর্থাৎ ১৪ এপ্রিলের মধ্যে) সিলিন্ডার গ্যাসের (এলপিজি) দাম নির্ধারণের কথা জানিয়েছে বিইআরসি। এর জন্য আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী গত ১৪ জানুয়ারি দিনব্যাপী গণশুনানিও করেছে বলে বিইআরসির আইনজীবী এ এম মাসুম ও আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসেন বিষয়টি আদালতে তুলে ধরেন। এরপরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জারি করা আদালত অবমাননার বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দেন।
আইনজীবীরা জানান, গ্যাসের মূল্য নির্ধারণে গণ শুনানির তথ্য দেয়ার ফলে হাইকোর্টে পার পেলেন বিইআরসি চেয়ারম্যান।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চে এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ বিইআরসির চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিলের পক্ষে আইনজীবী আব্দুল মতিন খসরু শুনানি করেন। তার সঙ্গে ছিলেন, আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসেন ও এ এম মাসুম।
ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসেন জানান, বিইআরসি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিলকে আদালত অবমাননার রুল থেকে অব্যাহতি বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আদালত। নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা ও এলপিজির দাম নির্ধারণে গণশুনানি করায় চেয়ারম্যানকে আদালত অবমাননা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে জানান আইনজীবীরা।
বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম নির্ধারণ করে আদালতে প্রতিবেদন না দেয়ায় বিইআরসি চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিলের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর আদালত অবমাননার রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।
আদালতের আদেশ প্রতিপালন না করায় কেন তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলেন আদালত।
সে নির্দেশ অনুযায়ী ২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর আইনজীবীর মাধ্যমে রুলের জবাব দেন বিইআরসির চেয়ারম্যান। তার সঙ্গে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে আদালত অবমাননার রুল থেকে অব্যাহতি চান তিনি। এরপর এ বিষয়ে সর্বশেষ প্রতিবেদন দেখে সোমবার (২৫ জানুয়ারি) এ আদেশ দেন উচ্চ আদালত।
গত ১৫ ডিসেম্বর, ওই দিন আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও এলপিজি (সিলিন্ডার) গ্যাসের দাম আমাদের দেশে কমছে না বরং বেড়েই চলেছে। অথচ আইনই কমিশনকে ক্ষমতা দিয়েছে মূল্য নির্ধারণের জন্য। কিন্তু কমিশনের ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তারা কোনো কাজ করেনি। আদালতের নির্দেশ প্রতিপালন না করে বরং তারা আদালত অবমাননা করেছিলেন।
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও এলপিজি (সিলিন্ডার) গ্যাসের দাম পুনঃনির্ধারণ না করাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- জানতে চেয়ে ২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট। ওই রুলের শুনানি অব্যাহতভাবে চলছে।
এফএইচ/এমআরআর/জিকেএস