মোবাইলের গ্রাহকদের অভিযোগ শুনতে মনিটরিং সেল করার নির্দেশ

মোবাইল অপারেটরদের সেবার মান, কল ড্রপ, ভয়েস কল ও ইন্টারনেট সার্ভিসের বিভিন্ন বান্ডিল প্যাকেজ ও মূল্য সম্পর্কে অভিযোগসহ গ্রাহকদের যেকোনো ধরনের অভিযোগ শুনানির জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েটের) একজন শিক্ষকসহ পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি বা মনিটরিং সেল গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কমিটিকে আদেশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
রোববার (২৩ জানুয়ারি) এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতের আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাসুম।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম এ মাসুম। তার সঙ্গে ছিলেন রিট আবেদনকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান রাহি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ও মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটর্স অব বাংলাদেশের (এমটব) একজন প্রতিনিধির সমন্বয়ে এই কমিটি করা হয়েছে।
পাশাপাশি কল ড্রপ, দুর্বল নেটওয়ার্কের কারণে বিচ্ছিন হয়ে ভোগান্তি বন্ধ করে স্বচ্ছ ভয়েস কল, দ্রুত গতির ইন্টারনেট ও স্থিতিশীল মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া এ নিয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। রুলে স্বচ্ছ ভয়েস কল, দ্রুত গতির ইন্টারনেট ও স্থিতিশীল মোবাইল নেটওয়ার্ক নিশ্চিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং গ্রাহকের কেনা মোবাইল ইন্টারনেট ডাটার পরিপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিতে প্যাকেজে মেয়াদ বাতিল করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান, রবির প্রধান নির্বাহী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী এরিক আস টাইগার্স ডেন ও টেলিটকের প্রধান নির্বাহী মো. শাহাব উদ্দিনসহ সাত বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ব্যারিস্টার এ এম মাসুম জানান, মোবাইল ফোন অপারেটরদের সেবার মান বিশেষ করে কল ড্রপ, ভয়েস কল, ইন্টারনেট সার্ভিস, ইন্টারনেটের বিভিন্ন বান্ডিল প্যাকেজ নিয়ে গ্রাহকদের অভিযোগের সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির ইমেইল ও ফোনে গ্রাহকরা তাদের অভিযোগ দিয়ে থাকেন।
তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহকদের এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সমস্যার সমাধান করা হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহকদের অভিযোগ অস্বীকার করে মোবাইল ফোন অপারেটররা। তাই মোবাইল ফোন গ্রাহকদের অভিজ্ঞতা ও অভিযোগ শুনতে একটি মনিটরিং সেল বা কমিটি করার নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত এই আদেশ দেন।
আইনজীবী এমএ মাসুম আরও বলেন, বিটিআরসির অভিযোগ সেল বিভিন্ন সময় অভিযোগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু সেই সেলটি যথাযথভাবে কাজ করছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। যদি কাজ করতো তাহলে এসব মোবাইল গ্রাহকদের ভোগান্তিগুলো থাকতো না। সেজন্য আমরা রিট আবেদনে বিটিআরসির অভিযোগ সেলটির কার্যক্রম তদারকি করতে একটি কমিটি চেয়েছিলাম। আদালত সেই কমিটি করে দিয়েছেন।
এফএইচ/এআরএ/জিকেএস