খসরু-পরওয়ারসহ বিএনপি-জামায়াতের ২২০০ নেতাকর্মীর জামিন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৫৪ পিএম, ০৬ আগস্ট ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে নাশকতার মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ বিএনপি-জামায়াতের ২ হাজার ২০০ নেতাকর্মীর জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ জামিন আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে নাশকতার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের জামিন দেওয়ার বিষয়টি আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা সুত্রে জানা গেছে।

জামিন পাওয়া উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান ওরফে শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব, দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনু, ১২ দলের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক, বাগেরহাট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এমএ সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সভাপতি (বিজেপি) ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেরর ব্যানারে গত ৫ আগস্ট রাজধানীর শাহবাগ থেকে আন্দোলন শুরু করেন ছাত্ররা। গত ১৬ আগস্ট রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদসহ ছয়জন শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এতে সারাদেশে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলেন ছাত্ররা। ঢাকাসহ সারাদেশে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়।

এতে শিক্ষার্থীসহ শত শত আন্দোলনকারী নিহত হন। সরকার দিক-বিদিক হারিয়ে ইন্টারনেট পরিষেবাসহ সব কিছু বন্ধ ঘোষণা করে কারফিউ জারি করেন। ছাত্ররা কারফিও প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে উচ্চ আদালত ছাত্রদের দাবির প্রেক্ষিতে ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের রায় ঘোষণা করেন। আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ নিহতের বিচার চেয়ে ৯ দফা দাবি ঘোষণা করেন।

এর মধ্যে শিক্ষার্থীসহ রাজনৈতিক নেতা কর্মীদের নামে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। এরপর দেশব্যাপী আন্দোলন আরও তীব্র আকার ধারণ করে। এতে সাধারণ জনগণও অংশ নেন। নির্বিচারে গুলি করে হত্যা এবং নির্যাতনের প্রতিবাদে গত ৩ আগস্ট সরকার পতনের একদফা দাবিতে ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা। পরদিন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে সারাদেশে পুলিশসহ শখানেক মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

ওইদিন সন্ধ্যা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়। আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তরফে সোমবার ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সোমবার (৫ আগস্ট) বেলা ১১টার পর থেকে লাখো জনতা ঢাকার শাহবাগসহ বিভিন্ন অংশে প্রবেশ করতে শুরু করে। এরই মধ্যে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান জানান, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন।

সোমবার (৫ আগস্ট) রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজনৈতিক বন্দিকে শিগগির মুক্তি দেওয়া হবে।

বিএনপির আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বলেন, বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নজরুল ইসলাম খান, রুহুল কবির রিজভীসহ অনেক নেতাকর্মীর জামিন আবেদন করি। আদালত শুনানি শেষে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। কারাগারে বেল্ডবন্ড পাঠানো হয়েছে। আশা করি সবাই আজই কারামুক্তি পাবেন।

জামায়াতের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ একাধিক নেতার জামিন আবেদন করি। আদালত শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর করেন।

জেএ/এমআইএইচএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।