টোল প্লাজায় দুর্ঘটনা: হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে লিগ্যাল নোটিশ

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজায় বাস দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে দেড় কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রত্যেককে ৫০ লাখ টাকা এবং গাড়ির ক্ষতিপূরণ বাবদ ২৫ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে লিগ্যাল নোটিশে।
গত ২৭ ডিসেম্বর টোল প্লাজায় অপেক্ষমাণ কয়েকটি যানবাহনকে বেপারী পরিবহনের একটি বাস অতর্কিত ধাক্কা দিলে ৬ জন নিহত হন। মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনার বিষয়ে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নন্দনকোনা গ্রামের বাসিন্দা ও দুর্ঘটনাকবলিত প্রাইভেটকারে আরোহনকারী স্ত্রী আমেনা আক্তারের (৪০) স্বামী নুর আলমের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শামসুর রহমান বাদল ও অ্যাডভোকেট মো. রিপন হোসাইন এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক, কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ের কান্ট্রি ম্যানেজার, জেলা প্রশাসক (ডিসি) ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জ, পুলিশ সুপার (এসপি) ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জ, কেরানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বেপারী পরিবহনের মালিকপক্ষ, হাইওয়ে পুলিশ সুপার (হাসারা) ও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে বিবাদী করে এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের (কার্যদিবস) মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। তা না হলে এর প্রতিকার চেয়ে রিট আবেদন করা হবে। আইনজীবীরা নোটিশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
নোটিশে বলা হয়, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মানুষের জীবনধারণের অধিকার অন্যতম মৌলিক অধিকার। বাসমালিক, ড্রাইভার, সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ এবং হাইওয়ে পুলিশের চরম অবহেলার কারণেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এমন মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে, বেপারী পরিবহনের বাসটির ফিটনেস সনদ ছিল না। ড্রাইভারের লাইসেন্সের মেয়াদ অনেক আগেই উত্তীর্ণ হয়েছে। এছাড়া ড্রাইভার স্বীকার করেছেন তিনি ক্যানাবিস নামক মাদক সেবন করতেন। কাজেই এটি স্পষ্ট যে বাসের ফিটনেস প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ এবং ড্রাইভারের লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের চরম গাফিলতির কারণে ৬ জন মানুষের মৃত্যু হয়। বাসের ফিটনেস সনদ উত্তীর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল বাসের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা এবং সংশ্লিষ্টদের অবহিত করা।
এছাড়া হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্ব ছিল বাসটির ফিটনেস আছে কি না সেটি পরীক্ষা করা এবং সংশ্লিষ্ট ড্রাইভারের বৈধ লাইসেন্স আছে কি না সেটাও নিরীক্ষা করা।
অন্যদিকে বাসের মালিক ফিটনেসবিহীন বাস রাস্তায় নামিয়ে এবং বৈধ লাইসেন্স ছাড়া ড্রাইভারকে দিয়ে বাস চালিয়ে চরম বে-আইনি কাজ করেছেন। কাজেই সবার পারস্পারিক অবহেলার ফলাফল এই দুর্ঘটনা। যার কারণে ৬ জন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা তাদের একান্ত কর্তব্য ছিল।
পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে বিষয়টি স্পষ্ট যে, সংশ্লিষ্টদের চরম অবহেলার কারণেই এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এফএইচ/ইএ/জেআইএম