ফরাসি পণ্য বয়কট করবে পাকিস্তান, দাবি ইসলামি গ্রুপের

ফ্রান্সে শেষ নবী হযরত মুহাম্মদের (সা.) ব্যাঙ্গচিত্র প্রদর্শনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানে একটি ইসলামি গ্রুপের যে বিক্ষোভ চলছিল মঙ্গলবার তা বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তেহরিকে লাবাইক (টিইএল) নামের ওই দলটির মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা ফরাসি পণ্য বর্জনের যে ডাক দিয়েছেন পাক সরকার তাতে সম্মতি জানিয়েছে।
সে কারণেই ওই দলটির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। সোমবার রাজধানী ইসলামাবাদে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। সে সময় ইসলামাবাদের প্রধান সড়কে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা।
তেহরিকে লাবাইকের মুখপাত্র ইজাজ আশরাফি টেলিফোনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, পাকিস্তান সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ফরাসি সব পণ্য বর্জনের বিষয়ে একমত হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ওই চুক্তি স্বাক্ষরের পরেই আমরা বিক্ষোভ বন্ধ করেছি।’ তবে চুক্তির বিষয়ে পাক সরকারের মুখপাত্র কোনো মন্তব্য করেননি। ওই চুক্তির একটি কপি পেয়েছে রয়টার্স। এতে দু’জন মন্ত্রী, শীর্ষ এক কর্মকর্তা এবং তেহরিকে লাবাইক নেতাদের স্বাক্ষর রয়েছে।
গত ১৬ অক্টোবর প্যারিসের উপকণ্ঠে দেশটির একটি স্কুলে শিক্ষকের শিরশ্ছেদ করেছে ১৮ বছর বয়সী এক কিশোর। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বিতর্কিত কার্টুন শিক্ষার্থীদের প্রদর্শনের কারণে ক্ষুব্ধ ওই কিশোর স্কুল শিক্ষককে হত্যা করেন।
পরে ফ্রান্সের সরকার ওই স্কুল শিক্ষককে দেশটির সর্বোচ্চ মরণোত্তর পদকে ভূষিত এবং বিভিন্ন ভবনের গায়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর বিতর্কিত সেই কার্টুনের প্রদর্শন শুরু করে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এই কার্টুনের প্রদর্শনের ব্যবস্থার নির্দেশ দেন।
ফরাসি পত্রিকা শার্লি এবদোও সম্প্রতি মানবতার মুক্তির দূত বিশ্বনবী (সা.)-এর অবমাননাকর কার্টুনগুলো পুনর্মুদ্রণ করেছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সব ধরনের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও কূটনৈতিক রীতিনীতি ভুলে ঘোষণা করেন যে, তার দেশে এ ধরনের কার্টুন প্রকাশ অব্যাহত থাকবে।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের এমন ইসলাম অবমাননাকর বক্তব্যের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্ব ক্ষোভে ফেটে পড়ে। বিভিন্ন মুসলিম দেশ ফরাসি পণ্য বর্জনের ডাক দেয় এবং ম্যাক্রোঁকে তার ইসলাম-বিদ্বেষী বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। মুসলিমদের কাছে মহানবী প্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব। তাকে অপমান করা বা তার সম্পর্কে খারাপ কিছু বলা অপরাধ বলে গণ্য হয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তান।
ওই চুুক্তিতে ফরাসি দূতকে বহিষ্কারের কথাও রয়েছে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে পার্লামেন্টের মাধ্যমে সরকারকে পাকিস্তান থেকে ফরাসি দূতকে বহিষ্কার করতে হবে। একই সঙ্গে বিক্ষোভ থেকে যেসব নেতাকর্মীদের আটক করা হয়েছে তাদেরও মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
টিটিএন/এমএস