রোজিনা মামলা থেকে চূড়ান্ত অব্যাহতি পাবেন, আশা আর্টিকেল নাইনটিনের

অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের বিতর্কিত মামলায় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন আর্টিকেল নাইনটিন।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের অধিকার সুরক্ষায় কাজ করা সংস্থাটি একই সঙ্গে আশা প্রকাশ করে, সাংবাদিক রোজিনার জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার স্বার্থে আদালত এই মামলায় কর্তৃপক্ষের দাখিল করা চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করবেন এবং এই হয়রানিমূলক মামলা থেকে তাকে চূড়ান্তভাবে অব্যাহতি দেবেন।
জানা যায়, এক বছরেরও বেশি সময় পর মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা গত ৪ জুলাই ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনে রোজিনাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, রোজিনার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
বুধবার (২৭ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আর্টিকেল নাইনটিন দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি রোজিনা ইসলাম আদালত থেকেও চূড়ান্ত অব্যাহতি ও ন্যায় বিচার পাবেন। এই মামলা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে এবং রাষ্ট্র হিসেবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখা ও সাংবাদিকদের সুরক্ষা প্রদানের প্রতিশ্রুতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আশা করি, দেরিতে হলেও এই মামলা দায়েরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং তারা রোজিনা ইসলামের ন্যায় বিচার পাওয়ার পথকে আর বাধাগ্রস্ত করবেন না।
তিনি আরও বলেন, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো এমন একটি আইনের অধীন, যা কখনোই একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা উচিত ছিল না। কারণ এই আইন তথ্য অধিকারকে খর্ব করে এবং সংবিধানে প্রদত্ত স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারের সরাসরি বিরোধিতা করে। আমরা সরকার এবং নীতিনির্ধারকদের কাছে ১৯২৩ সালের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট বাতিল করার জন্য পদক্ষেপের দাবি জানাই।
২০২১ সালের ১৭ মে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রায় ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্তা ও নির্যাতন করা হয়। একই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে তাকে শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে তার বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এক সপ্তাহের মাথায় গত বছরের ২৩ মে তিনি জামিনে ছাড়া পান। এরপর থেকে তিনি আদালতে হাজিরা দিয়ে আসছেন।
এমওএস/আরএডি