চীন ফেরতদের করোনাভাইরাসের পরীক্ষা না করায় সংসদে ক্ষোভ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৫৭ পিএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০
ফাইল ছবি

হযরত শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে চীন ফেরত যাত্রীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই দেশে প্রবেশের সুযোগ দেয়ায় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে এ বিষয়ে সংসদে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের বিবৃতির দাবি জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় সাংসদ এবং সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় সংসদের সভাপতিত্বে ছিলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

মুজিবুল হক চুন্নু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। কিন্তু ঢাকা আন্তর্জাতিক শাহজালাল বিমানবন্দরে চীন ফেরত যাত্রীদের পরীক্ষার অবহেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেখানে প্রয়োজনের তুলনায় ডাক্তারের সংখ্যা কম থাকায় রাতের শিফটে বেশ কয়েকজন যাত্রী পরীক্ষা ছাড়াই বেরিয়ে এসেছে। বিমানবন্দরের হেল্প ডেস্ক ফাঁকা। চীন ফেরত এক যাত্রীর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন চীন থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, চায়না সাউদার্নসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্স প্রায় ৭০০ যাত্রী ঢাকায় নিয়ে আসে। চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের প্রায় ১৫০ জন যাত্রী কোনো পরীক্ষা ছাড়াই দেশে প্রবেশ করেছে বলে মুশফিকা সারা নামে এক যাত্রী অভিযোগ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ‘গত পহেলা ফেব্রুয়ারি রাত এগারোটায় চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে ঢাকায় আসার সময় দুইবার পরীক্ষা করিয়েছে চীনের এয়ারপোর্টে। কিন্তু হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর দীর্ঘ দুই ঘন্টা লাইনে দাঁড়ানোর পরীক্ষা করা হয়নি।’

তিনি আরও লেখেন, ‘ওইদিন দুপুর দুইটায় চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্স চীনা ও বাংলাদেশি যাত্রীদের ঢাকায় কোনো রকম চেকআপ করা হয়নি। রাত সাড়ে বারোটায় ওই নাগরিকরা ইমিগ্রেশন পার হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আমিসহ চীনা নাগরিকরা প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বিমানবন্দরে অপেক্ষা করার পরও কাউকে চেকআপ করা হয়নি। ৫ ঘণ্টা পর জানা যায় চেকআপ করার জন্য কোনো চিকিৎসক সেদিন এয়ারপোর্টে ছিলেন না। বিমান থেকে নামার সময় যে ফরমটি দেয়া হয়েছিল, সেই ফরমটিতে ‘ওক ‘ এবং ‘চেকড’ লিখে ইমিগ্রেশন পার হওয়ার অনুমতি দেয়া হয়।’

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, চীন থেকে আসা যাত্রীদের মধ্যে কেউ যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত না- সেটা কোনো পরীক্ষা ছাড়াই কর্তৃপক্ষ কীভাবে নিশ্চিত হলেন? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জরুরি অবস্থা ঘোষণার মধ্যেই এই ধরনের গাফলতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি আরও বলেন, এ রোগকে এতো গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে নেয়ার পরও, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দেয়ার পরও এক থেকে দেড়শ যাত্রী কোনো রকম পরীক্ষা ছাড়াই তাদেরকে চেক করা হলো না। এমনকি ফ্রমে লিখে দেয়া হলো তাদের চেক করা হয়েছে। আমরা কোথায় আছি? আজকে দেশ ও জাতির মধ্যে যদি কারও কাছ এই ভাইরাস আসে তাহলে সারা দেশে মহামারি হয়ে যাবে। এটা এতই গুরুত্বপূর্ণ যে আমি স্পিকারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী মহোদয়কে অনুরোধ করব জরুরি ভিত্তিতে এটি তদন্ত করুন এবং দেশের মানুষকে আশ্বস্ত করার জন্য সংসদে বিবৃতি দিন।

এছাড়া চীন থেকে কাপড় আমদানি করে আনার পর সেখানে বালু পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী তিনি ৪০ লাখ টাকার এলসি খুলেছেন কাপড় আনবেন বলে। কিন্তু শুল্ক গোয়েন্দার কাছে বালু এনে ধরা পড়েছে। এগুলো শক্তভাবে ধরেন। কারণ টাকা তো এভাবেই পাচার হচ্ছে। আমার মনে হয় লাখ রাখ কোটি টাকা পাচারের এটা একটি অন্যতম রুট। তাই মাননীয় অর্থমন্ত্রী আপনি এগুলো দেখুন। দেশটাকে রক্ষা করুন। দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করুন। এই টাকা পাচার রোধ করুন।

এইচএস/এমএসএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।