ইমিগ্রেশন হচ্ছে না ওমরাহ যাত্রীদের, ৫ ফ্লাইটের যাত্রী আটকা
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রভাবে ওমরাহ যাত্রী ও মসজিদে নববী ভ্রমণকারীদের জন্য সৌদি আরবে প্রবেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে সৌদি সরকার। বুধবার রাতে এক বিবৃতির মাধ্যমে হুট করেই এই সিদ্ধান্ত নেয় তারা। সৌদি সরকারের সিদ্ধান্তের কারণে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাংলাদেশের কোনো ওমরাহ যাত্রী সে দেশের উদ্দেশে রওনা হতে পারছেন না। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে দেয়া হচ্ছে তাদের।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-ইমিগ্রেশন) জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন এয়ারলাইন্স থেকে আমাদের ওমরাহ ভিসাপ্রাপ্ত যাত্রীদের ইমিগ্রেশন না করানোর মৌখিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে সেসব দেশের শ্রমিকরা যেতে পারছেন।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সকাল থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ইকে-৫৮৩, কাতার এয়ারওয়েজের কিউআর-৬৪১, এয়ার এরাবিয়ার জি৯-৫১৮, সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি-৮০৯ এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-০৪৯ ফ্লাইটে প্রায় ৩ শতাধিক ওমরাহযাত্রীর জেদ্দা ও মদিনা যাওয়ার কথা ছিল। তবে সৌদি সরকারের হঠাৎ সিদ্ধান্তে তারা শাহজালালে এসে ভোগান্তিতে পড়েছেন।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক উইং কমান্ডার এ এইচ এম তৌহিদ-আল-আহসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘ওমরাহ যাত্রীরা সৌদিতে গিয়ে ঢুকতে পারবেন না বলে শুনেছি। তাই তাদের বাংলাদেশেই রাখা হচ্ছে।’
বিমানবন্দর এপিবিএন সূত্র জানায়, সকাল থেকে অনেকেই ওমরাহ করার প্রস্তুতি নিয়ে এসে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কেউ আবার বিমানবন্দরেই অবস্থান করছেন।
ভোরে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের দুবাই হয়ে জেদ্দা যাওয়ার কথা ছিল ওমরাহযাত্রী আব্দুস সোবহানের। ইমিগ্রেশন অফিসার তার ভিসা দেখে তাকে ফিরিয়ে দেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের আগে থেকে কিছু বলা হয়নি। আমরা যশোর থেকে ঢাকা এসেছি। কখন যেতে পারবো, টিকেটের টাকা ফেরত পাবো কি না তা এখনো নিশ্চিত না।
বুধবার রাতে সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, সৌদি আরবে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় যারা ওমরাহ করতে চাচ্ছেন বা মদিনায় মসজিদে নববীতে যেতে চাচ্ছেন তাদের প্রবেশাধিকার অস্থায়ীভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ জাগো নিউজকে বলেন, সৌদি আরবে প্রবেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। ফলে সৌদি সরকারের পরবর্তী নির্দেশনা ছাড়া বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। তিনি আরও বলেন, সৌদি সরকার নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আমাদের মানতে হবে। কবে ওমরাহ যাত্রীরা পুনরায় সৌদিতে ঢোকার সুযোগ পাবেন, সেটা দেশটির সরকারের ওপর নির্ভর করছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথমবারের মতো ধরা পড়ে করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত এটি বিশ্বের অন্তত ৪৩টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। অবশ্য বাংলাদেশে এখনও কেই এ ভাইরাসে আক্রান্ত হননি। তবে সিঙ্গাপুরে কয়েকজন বাংলাদেশি এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সেখানকার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ হাজার ৯৬৭ জন এবং মারা গেছেন ২৮০৪ জন।
এআর/এনএফ/পিআর