করোনা প্রতিরোধে চালু হচ্ছে ওয়ান স্টপ কো-অর্ডিনেশন সেল
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আগাম সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালককে (পরিকল্পনা) প্রধান করে স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ওয়ান স্টপ কো-অর্ডিনেশন সেল চালু হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) তৃতীয় তলায় সেলের কর্মকর্তারা প্রতিদিন উপস্থিত থেকে সারাদেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গৃহীত ব্যবস্থার বাস্তবায়ন ও সমস্যা সমাধানের সার্বিক দিকনির্দেশনা প্রদান করবেন। এতদিন স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন কর্মকর্তা করোনাভাইরাস সম্পর্কে বিছিন্নভাবে দিকনির্দেশনা দিলেও এখন থেকে সেলের মাধ্যমে সারাদেশে অভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.আবুল কালাম আজাদ ওয়ান স্টপ কো-অর্ডিনেশন সেল চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিশ্বে যেভাবে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে সে প্রেক্ষাপটে আমাদের দেশে এটা সংক্রমিত হবে না, এমনটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। এ ভাইরাস প্রতিরোধে আমার অনেক আগে থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আরও অধিকতর অর্থাৎ সর্বোচ্চ সতকর্তা অবলম্বনের জন্য ওয়ান স্টপ কো-অর্ডিনেশন চালু করা হচ্ছে। অতিরিক্ত মহাপরিচালকের (পরিকল্পনা) নেতৃত্বে এ সেলে পরিচালক সংক্রমণ ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ, পরিচালক হাসপাতাল, পরিচালক অর্থসহ অন্য শীর্ষ কর্মকর্তারা থাকবেন।
করোনাভাইরাস সম্পর্কিত সব নির্দেশনা সারাদেশে একই স্থান থেকে যাবে। সমন্বিতভাবে কার্যক্রম করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা করোনাভাইরাসের বিশ্ব পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, ‘চীনসহ বিশ্বের ৭৭টি দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। চীনে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৮০ হাজার ৪২২। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১২০ জন। মোট মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ৯৮৪। নতুন মৃতের সংখ্যা ৩৮। চীনের বাইরে ৭৬ দেশে মোট রোগীর সংখ্যা ১২ হাজার ৬৬৮। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১০৩। মোট মৃতের সংখ্যা ২১৪। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা ৪৮।’
দক্ষিণ কোরিয়া, ইরান ও ইতালির সার্বিক অবস্থা এখনও উদ্বেগজনক জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানকার পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইতালির মিলানে একজন বাংলাদেশি আক্রান্ত হলেও তিনি সুস্থ রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছে। সিঙ্গাপুরে আক্রান্ত পাঁচজনের মধ্যে দুজন এখনও হাসপাতালে। প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে কোনো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়নি। গত ২১ জানুয়ারি থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত সারাদেশে বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, স্থলবন্দর ও রেলওয়ে স্টেশনে থার্মাল স্ক্যানার ও হ্যান্ড স্ক্যানারের মাধ্যমে ৪ লাখ ৪৩ হাজারেরও বেশি বিদেশফেরত যাত্রীর স্ক্রিনিং হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলেও কারো দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।
এমইউ/এমএসএইচ/জেআইএম