মিনিটে ৩ কল আইইডিসিআরের হটলাইনে

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:২৭ পিএম, ১২ মার্চ ২০২০

বিদেশফেরত দেশি-বিদেশি নাগরিকসহ যে কারও করোনাভাইরাস সম্পর্কিত তথ্য জানানোর জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) ১৩টি হটলাইন মোবাইল নম্বর চালু করেছে।

মাসখানেক আগে থেকে ৪টি হটলাইন নম্বর চালু হলেও গত ৮ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিনজন রোগী (দুজন ইতালি প্রবাসী ও তাদের একজনের মাধ্যমে আরেকজন আক্রান্ত) শনাক্ত হওয়ার পর আইইডিসিআর হটলাইন নম্বরে করোনা নিয়ে উদ্বিগ্ন মানুষের কলের সংখ্যা হঠাৎ করে বেড়ে যায়। চারটি হটলাইন নম্বরে সামাল দিতে না পেরে আরও নতুন ৮টি নম্বর ও টেলিফোনে মোবাইল সেবা ১৬২৬৩ নম্বরসহ মোট ১৩টি হটলাইন চালু হয়। এতগুলো হটলাইন নম্বর চালুর পরও কল রিসিভ করে সারতে পারছেন না কর্তব্যরতরা।

আইইডিসিআর সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় হটলাইনে সর্বমোট ৪ হাজার ৩২৯টি কল, অর্থাৎ গড়ে প্রতি মিনিটে ৩টি করে কল আসছে। মোট কলের মধ্যে ৪ হাজার ২১২টি কলই করোনা সংক্রান্ত। দেশে অবস্থান করছে, বিদেফেরত কারও সংস্পর্শে আসেনি এমন অনেকেই সামান্য হাঁচি কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হটলাইনে যোগাযোগ করে করোনার পরীক্ষা করতে হবে কি-না, কত টাকা লাগবে ইত্যাদি জানতে চাইছেন।

গত ৮ মার্চ দেশে তিনজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়। তাদেরকে হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিটে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তাদের দুজন প্রায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন। যেকোনো সময় হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।

সম্ভ্যাব্য করোনায় আক্রান্ত রোগীদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি জাতীয় কমিটিসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পৃথক তিনটি কমিটি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

কিন্দু এতকিছুর পরও দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি সম্পর্কে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে দুলছে। অনেকেই বিশ্বাস করতে চাইছে না যে দেশে রোগটি ছড়িয়ে পড়েনি। কেউ কেউ বলছে, সরকার তথ্য গোপন করছে। হঠাৎ করে রোগটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ার ঘোষণা আসতে পারে বলে তারা মনে করছেন।

অবশ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে দৃঢ়চিত্তে বলেছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে সঠিক পথেই এগুচ্ছে দেশ। রাজধানীর বড় হাসপাতাল থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ের হাসপাতালও প্রস্তুত রয়েছে।

আইইডিসিআর সূত্রে জানা গেছে, গত ২১জানুয়ারি থেকে বুধবার (১১ মার্চ) পর্যন্ত সারা দেশে বিভিন্ন বন্দরে মোট ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৯১৩ জনের স্ক্রিনিং করা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় স্ক্রিনিং করা হয় ১৪ হাজার ১৬৭ জনের। তার মধ্যে হযরত শাহজালালসহ তিনটি আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে ৬ হাজার ৩২৬ জন, স্থলবন্দরে ৭ হাজার ৩৪৭, দুটি সমুদ্রবন্দরে ৩৪২ ও বেনাপোল ও ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশনে ১৫২ জনের স্ক্রিনিং করা হয়। বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে করোনা সন্দেহে আইসোলেশনে রয়েছেন ১০ জন। আর ৪ জনকে কোয়ারেনটাইনে রাখা হয়েছে।

এমইউ/এমএসএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।