প্রবাসীদের হাতে ‘হোম কোয়ারেন্টাইনের সিল’
হোম কোয়ারেন্টাইনের মৌখিক নির্দেশনা দেয়ার পরও বিদেশফেরত অনেকেই সেগুলো না মেনে বাইরে ঘুরাফেরা করছেন। কেউ বিয়ে করেছেন, কেউ বাজারে গিয়ে আড্ডা দিচ্ছেন। তাই এ ধরনের অনিয়ম বন্ধে দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোতে নামলেই প্রবাসীদের হাতে হোম কোয়ারেন্টাইনে যাওয়ার বাধ্যবাধকতার একটি সিল দিয়ে দিচ্ছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
শুক্রবার থেকে পরীক্ষামূলকভাবে প্রবাসীদের হাতে এই সিল দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দেশের বাইরে থেকে আসা সব প্রবাসীর হাতের কবজি ও কনুইয়ের মাঝামাঝি এই সিল দেয়া হচ্ছে। যাতে এলাকার লোকজন তাদের দেখে খুব সহজেই প্রবাসী হিসেবে শনাক্ত করতে পারেন।
সিলটিতে লেখা আছে, ‘প্রাউড টু প্রটেক্ট বাংলাদেশ, হোম কোয়ারেন্টাইন আনটিল (তারিখ...)’।
আজ যারা দেশে অবতরণ করেছেন সেসব প্রবাসীর হাতে পরবর্তী ১৪ দিন অর্থাৎ ৩ এপ্রিল পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে থাকার সিল দেয়া হয়েছে।
বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে, এখন থেকে ফ্লাইটগুলোতে যত বিদেশফেরত যাত্রী আসছেন তাদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে এই সিল দেয়া হবে। খুব সহজে মুছবে না এ সিল। তবে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর কাউকে যদি করোনা আক্রান্ত সন্দেহ করা হয়, তাদের সেনাবহিনীর তত্ত্বাবধানে কোয়ারেন্টাইন করা হবে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তৌহিদ- উল-আহসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগামীকাল (২১ মার্চ) থেকে এ কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে আজ (২০ মার্চ ) থেকে পরীক্ষামূলকভাবে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অনেকেই অভিযোগ করেন, প্রবাসীরা নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে অবাধে চলাফেরা করছেন। তাই তাদের চিহ্নিত করার জন্য এই সিল।’
ভারতে কয়েক সপ্তাহ আগে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনের এই সিল দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়।
এদিকে দেশের বিমানবন্দর হয়ে গ্রামে যাওয়া প্রবাসীদের বিস্তারিত নাম-পরিচয় ও ঠিকানা ইমিগ্রেশন পুলিশ সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মাধ্যমে স্ব স্ব জেলার ডিসির কাছে পাঠাচ্ছে। জেলার ডিসিদের এগুলো তদারকি করতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। এরপর দিনে দিনে এ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ২০ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন একজন।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) বাংলাদেশে সংক্রমণের যে তথ্য দিচ্ছে, এতে দেখা যাচ্ছে, বিদেশফেরত বা তাদের সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিরা ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু অনেক প্রবাসফেরতকেই কোয়ারেন্টাইনে রাখা যাচ্ছে না। আশকোনায় হজ ক্যাম্পে এ নিয়ে হট্টগোলও বেধেছিল। বাড়ি ফিরেও তারা অবাধে ঘুরাফেরা করছেন। এ জন্য তাদের অনেককে জেল-জরিমানাও করা হয়েছে।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাস এখন বৈশ্বিক মহামারি। এতে সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬১৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১০ হাজার ৪৮ জন। এ ছাড়া চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৮ হাজার ৪৩৭ জন।
এআর/জেডএ/পিআর