চিকিৎসকের এমন উদ্যোগে চোখে জল এল রিকশাচালকের
বাংলাদেশে এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩ জন। প্রাণঘাতি এ ভাইরাসে মারা গেছেন ৩ জন। এ ছাড়া বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৬ হাজার মানুষ। আক্রান্তের সংখ্যাও সাড়ে ৩ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশ ভাইরাসের ভয়াবহতা এমন সময় বুঝলো যখন মানুষ বাঁচার জন্য দিকবিদিক।
এদিকে ঢাকার রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে গেছে। চরম বিপদে পড়েছেন দিনমজুর, শ্রমিক, রিকশাচালকরা। রাস্তায় মানুষ না থাকায় রিকশাওয়ালারা যাত্রী পাচ্ছেন না। ফলে তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কে জানে কদিন পরে তাদের কপালে কী আছে?
আজ ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এতে চাকুরিজীবীরা হয়তো ছুটি পাবে। কিন্তু দিনমজুররা কী করবে? তাদের সন্তানরা কী খাবে? গোটা দেশ যখন দিনমজুরদের নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়, তখন সেই দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিলেন একজন ডাক্তার। নিজের সাধ্যমতো তিনি রিকশাওয়ালাদের নিত্যপণ্য বিতরণ করে যাচ্ছেন।
লোকটির নাম ডা. নুরুল হাসান। কয়েকদিন ধরে তিনি রাজধানীর উত্তরায় রিকশাওয়ালাদের চাল-ডাল-লবণ-আলু এবং সাবান দিয়ে যাচ্ছেন। এই ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। বাহবা দিচ্ছে সবাই। নুরুল হাসানের এমন উদ্যোগ দেখে অনেকেই এসে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন।
এমনিতেই করোনা আক্রান্ত রোগীদের পর সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন চিকিৎসকরা। কারণ তারা সরাসরি রোগীদের সেবা করেন। এর মাঝে নুরুল হাসানের এমন অনবদ্য উদ্যোগ, চোখে জল এনে দেয়।
অনুদান পাওয়া এমন কয়েকজন রিকশাচালকের সঙ্গে কথা হয়। তারা বলেন, ‘ঢাকা এখন শুধুই ফাঁকা। যাত্রী পাচ্ছি না। আমরা এখন খাব কী? দিন আনি দিন খায়। এমন পরিস্থিতিতে তিনি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন আল্লাহ যেন তাকে ভালো রাখেন। চিকিৎসকের কথা আমরা কোনোদিন ভুলব না। চোখের জল থামাতে পারছি না এই মহান মানুষটার কাজ দেখে’।
করোনা নিয়ে মার্কিন ওই বিশ্ববিদ্যালয় তাদের হিসাবে বলছে, প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৪১৩ জন মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন ১৬ হাজার ১০৪ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৬৯ জন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যায় এখনো সবার উপরে রয়েছে চীন। দেশটিতে কোভিড-১৯৮ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৮১ হাজার ৪৯৬। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ইতালি। তবে সবচেয়ে বেশি এবং চীনের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে। সেখানে ৬ হাজার ৭৭ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩ হাজার ৯২৭ জন।
চীন ইতালির পর সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ২০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে স্পেনে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৮৯ জন। তবে স্পেনের চেয়ে বেশি আক্রান্তের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে ৪৮৩ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজার ৮৪১।
এমআরএম