ছুটিতে বাড়ি যাওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশ পুলিশের
দেশে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আগামী ১০ দিনের যে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, এই ছুটিতে নাগরিকদের গ্রামের বাড়ি বা নিজ নিজ জেলায় যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেছে বাংলাদেশ পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) দেশবাসীর উদ্দেশ্যে এক বার্তায় এ কথা জানায় পুলিশ সদরদফতর। সোমবার (২৩ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সব প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণার পরপরই বাস, ট্রেন ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে ঢাকাবাসীর বাড়ি ফেরার হিড়িক শুরু হয়।
পুলিশ সদরদফতর জানায়, জনগণের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য সরকার ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সব সরকারি এবং বেসরকারি অফিস আদালতে ছুটি ঘোষণা করেছে। এই ১০ দিনের ছুটিতে অনেকেই হয়তো সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য না বুঝে বা সচেতনতার অভাবে অথবা অতি উৎসাহের কারণে পরিবার-পরিজন নিয়ে গ্রামের বাড়িতে ছুটবেন। এতে দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। তাই বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি ফিরতে বারণ করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে পুলিশ সদরদফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মো. সোহেল রানা জাগো নিউজকে বলেন, যদি এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষ ঢাকা ছেড়ে বাড়ি ফিরে যায়, তাহলে শুধু সরকারের উদ্দেশ্যই ব্যাহত হবে না, বরং এ পর্যন্ত মহামারি যে হারে ছড়াচ্ছিল তখন তা তার চেয়ে আরও অনেক ভয়াবহরূপে ছড়াবে। কারণ জনবহুল এলাকা, গণসমাগমস্থল ও গণপরিবহন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযোগী ক্ষেত্র। তাই বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া গণপরিবহন (বাস, ট্রেন, লেগুনা, লঞ্চ, ফেরি, অটোরিকশা, সিএনজি ইত্যাদি) ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
বিদেশফেরতদের নিকটস্থ থানায় যোগাযোগের নির্দেশ
এদিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ সদরদফতর জানায়, করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে বাংলাদেশ পুলিশের সব ইউনিট সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। সময়ে সময়ে সরকার যে নির্দেশনা দিচ্ছে, নিষ্ঠার সাথে তা প্রতিপালন করছেন বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা। ইতোমধ্যে সরকারের নির্দেশনামতে বিদেশফেরত প্রবাসী নাগরিকরা হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন কি-না তা নিশ্চিত করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেয়া হয়েছে এবং হচ্ছে। আশঙ্কার সাথে লক্ষ্য করা গেছে, উল্লিখিত সময়ের মধ্যে দেশে ফেরা বেশিরভাগ প্রবাসীই তাদের পাসপোর্টে উল্লিখিত ঠিকানায় অবস্থান করছেন না। তাদের অনেকেই সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে ঘোরাফেরা করছেন যা বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের নিজেদের এবং সাধারণ জনগণের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ১ মার্চ থেকে এ যাবত বিদেশফেরত সব সম্মানিত প্রবাসী নাগরিককে তাদের বর্তমান অবস্থান নিকটস্থ থানায় অতিসত্তর যোগাযোগ করে তাদের বর্তমান ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর জানাতে অনুরোধ করা হচ্ছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রন ও নির্মূল) আইন-২০১৮, বাংলাদেশ দণ্ডবিধি এবং প্রযোজ্য অন্যান্য আইনের উপযুক্ত ধারামতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমনকি প্রয়োজনে তাদের পাসপোর্ট রহিত করারও উদ্যোগ নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, প্রবাসী ব্যক্তিদের পক্ষে অন্য কেউ থানায় যোগাযোগ করে ওই প্রবাসী ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের অবস্থান ও ঠিকানা জানাতে পারবেন।
এআর/এইচএ/পিআর