পুলিশকে মানবিক হওয়ার আহ্বান আইজিপির
বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের সব পুলিশ সদস্যকে সাধারণ জনগণের প্রতি পেশাদার, ধৈর্যশীল ও মানবিক আচরণ করতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। রোববার পুলিশ সদর দফতরে এক সীমিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, শুধু দেশে নয় করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্ব বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে আমরা সবার পাশে থাকতে চাই, সবার সঙ্গে থেকে একসাথে কাজ করতে চাই। ইনশাআল্লাহ্ আমরা সবাই মিলে এ যুদ্ধে জয়ী হব। আমরা সব সদস্যকে বলেছি, আপনারা জনগণের সাথে পেশাদার, ধৈর্যশীল ও মানবিক আচরণ করবেন।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা পুলিশ সদস্যদের করণীয় ও বর্জনীয় তৈরি করেছি। তারা কি করতে পারবেন, কি করতে পারবেন না ইতোমধ্যে আমরা এসওপি (স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর) তৈরি করে তাদের জানিয়েছি। এছাড়া আমরা ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কমিটি করেছি। যাতে করোনার বাইরেও পুলিশের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত না হয়। ফিল্ড কমান্ডারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।
‘আমি ব্যক্তিগতভাবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সব ইউনিটের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেছি, মোবাইলে ও ক্ষুদেবার্তায় প্রতি মুহূর্তে ঊর্ধ্বতন অফিসারদের সব তথ্য পৌঁছে দিচ্ছি,’ যোগ করেন আইজিপি।
করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে দেশের গুজব পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, করোনাকে কেন্দ্র করে পৃথিবীব্যাপী ফেক নিউজ ও গুজব ভয়ঙ্কর রূপে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। আমরা গুজব ও ফেক নিউজের বিরুদ্ধে প্রচারণা ও ব্যবস্থা নিচ্ছি। গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাব পুলিশের সাইবার টিম কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং গুজব ছড়ানো আইডি বন্ধ করা হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতিতে পুলিশের কর্মকাণ্ড তুলে ধরে আইজিপি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ প্রথম থেকেই কোভিড-১৯ নিয়ে কাজ করছে। প্রথম থেকেই আমরা কয়েক লাখ সচেতনতা লিফলেট বিতরণ করেছি। সচেতনতামূলক ব্যানার তৈরি করে পুলিশের গাড়িতে লাগানো হয়েছে, সারাদেশে মাইকিং করা হয়েছে যাতে মানুষ সচেতন হয়। এছাড়াও বিদেশফেরতদের কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা এবং দেশে ফেরত আসাদের তালিকা জেলা প্রশাসনসহ সবাইকে দিয়েছি যেন তারা মনিটর করতে পারেন।
মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, পর্যাপ্ত সুরক্ষা নিশ্চিত না করেই করোনা বিস্তারের প্রথম দিক থেকে পুলিশ প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা প্রবাসীদের খোঁজ খবর নিয়েছেন। যাদেরকে পাসপোর্টে উল্লিখিত ঠিকানায় গিয়ে পাওয়া যায়নি, তাদের থানায় যেতে বলেছি। এরপরেও অনেকে সরকার ও পুলিশের বিনীত আহ্বানে সাড়া দেননি, হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকেননি। তাদের আমরা ম্যাজিস্ট্রেটের সহায়তায় জরিমানা নিশ্চিত করেছি। করোনা সন্দেহে কোনো রোগী যখন মারা যাচ্ছে তাদের দাফনের জন্য পুলিশ নিরাপত্তা দিচ্ছে। সেসব সদস্যের জন্য আমরা পিপিই দিচ্ছি। এছাড়াও পুলিশের হাসপাতালগুলোতে আমরা পিপিই দিচ্ছি। পরবর্তীতে সাধারণ হাসপাতালগুলোতেও পুলিশের পক্ষ থেকে পিপিই দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
সাধারণ মানুষের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, আপনারা সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাবেন না।
যারা এই নির্দেশনার আওতার বাইরে, তাদের পরিচয়পত্র রাখা এবং প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রদর্শনের আহ্বান জানান আইজিপি।
এআর/এমএফ/এমকেএইচ