লোকে লোকারণ্য হাজীপাড়া বউবাজার
সামাজিক দূরত্ব বাজায় রাখার মাধ্যমে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এসময় নাগরিকদের ঘরে থাকার আহ্বান জানালেও তা অমান্য করে রাজধানীর হাজীপাড়া বউবাজার প্রতিদিন থাকছে লোকারণ্য। কেউ বাজার করতে, আবার কেউ কেউ অকারণেই বাজারে এসে ভিড় করছেন। একসঙ্গে জড়ো হয়ে কেউ কেউ মেতে উঠেছেন খোশগল্পে। সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে কারও কোনো উদ্যোগ নেই। এমনকি যারা বাজারে আসছেন তাদের মধ্যেও কোনো ধরনের সচেতনতা নেই।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে বাজারটিতে গিয়ে দেখা যায়, শতাধিক মানুষ বাজারে ঘোরাঘুরি করছেন। একজন আরেকজনের গা-ঘেঁসে চলাচল করছেন। আবার যারা বাজার করছেন তারাও দোকানের সামনে গা-ঘেঁসে দাঁড়িয়ে থাকছেন। যেন করোনাভাইরাস নিয়ে কারও মধ্যে কোনো দুশ্চিন্তা নেই।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। ছুটির সময়ে অফিস-আদালত, গণপরিবহন সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরি সেবা এই বন্ধের বাইরে রয়েছে। সাধারণ মানুষ যেন অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হয় সে জন্য পুলিশের পাশাপাশি রাস্তায় নেমেছে সশস্ত্র বাহিনীও।
করোনা বিস্তার ঠেকাতে সরকার এমন উদ্যোগ নিলেও মালিবাগ হাজীপাড়া বউবাজারে প্রতিদিন শতশত মানুষ একসঙ্গে জড়ো হচ্ছেন।
বাজারে এভাবে ঘোরাঘুরির বিষয়ে মালেক নামের একজন বলেন, ঘরে কতক্ষণ বসে থাকতে ভালো লাগে? কাজ নেই, ঘরে বসে থেকে থেকে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছি। তাই একটু বাইরে ঘুরতে এসেছি।
করোনা ভাইরারেস ভয় লাগে না? এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ভয় করে কি হবে? যার করোনা হবে, ঘরে বসে থাকলেও তার হবে। যার যেভাবে মৃত্যু লেখা আছে, সেইভাবেই হবে। কেউ ঠেকাতে পারবে না।
বাজার করতে আসা ফাতেমা বলেন, এই বাজারে প্রতিদিনই মানুষের এমন ভিড় থাকে। করোনাভাইরাসে যেভাবে মানুষ মরছে তাতে বাইরে বের হতে ভয় হয়। কিন্তু কী করা? খাইতে হলে তো বাইরে বের হতেই হবে। ঘরে বাজার না থাকলে খাব কী? তবে বাজারে একজন আরেকজন থেকে দূরে দাঁড়িয়ে থাকলে ভালো হয়। কিন্তু এখানে কেউ সেই নিয়ম মানে না। আবার কেউ নিয়ম মানার উদ্যোগও নেয় না।
বাজারে প্রবেশ মুখের একটি বাসার বাসিন্দা রোমেল বলেন, সরকার সাধারণ ছুটি দিয়ে মানুষকে ঘরে থাকতে বলেছেন। অতি প্রয়োজনে ভিড় এড়িয়ে বাইরে যেতে বলা হয়েছে। কিন্তু বউবাজারে প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা ভিড় লেগে থাকে। এতে এখান থেকে করোনাভাইরাস ছাড়ানো আশঙ্কা রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের দ্রুত এখানে মানুষের ভিড় ঠেকানোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
এমএএস/এমএফ/এমকেএইচ