রাতে বেপরোয়া চলছে ট্রাক-লরি
করোনাভাইরাসের কারণে দেশে অঘোষিত লকডাউন থাকায় রাজধানী ঢাকার চিরচেনা রাস্তা এখন ফাঁকা। দিনে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের দাপট থাকলেও রাতে ট্রাক ও লরি যেন দানব হয়ে ওঠে। বিকট হাইড্রোলিক হর্ন বাজিয়ে বেপরোয়া চলছে এসব। এ জন্য কোথাও কোথাও দুর্ঘটনাও ঘটছে। শান্ত ঢাকায় বিকট হর্নে প্রয়োজনের তাগিদে বের হওয়া মানুষজন কেঁপে উঠছেন।
আজ রাতে রাজধানীর বিশ্বরোড, রামপুরা, বাড্ডা এলাকা ঘুরে এ দৃশ্য দেখা গেছে। কুড়িল বিশ্বরোডে একজন রোগীকে বহন করা অটোকে ট্রাক কর্তৃক ধাক্কা দিতে দেখে গেছে। এ সময় রাস্তায় বড় বড় লরি ও ট্রাক চললেও গতি দেখার কেউ ছিল না। এছাড়া প্রত্যেকটি ট্রাক ও লরি অপ্রয়োজনে হর্ন দিচ্ছে। এদের বেশির ভাগই হাইড্রোলিক হর্ন, যা সরকার কর্তৃক অনেক বছর আগেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
দিনের বেলা এসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকলেও রাতে কাউকে দেখা যায়নি। তবে অনেক জায়গায় রাস্তার দুই ধারে অভাবী মানুষের জটলা দেখা গেছে।
রামপুরা কাঁচাবাজারের অধিবাসী মকবুল আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘রাজধানীতে এখন শব্দদূষণ নেই। কিন্তু রাতের বেলায় বিকট শব্দে হর্ন বাজিয়ে ট্রাক চলে। এদের গতিও বেপরোয়া। আসলে করোনার ভয়ও এদের ভীত করতে পারেনি। দিন রাত জোরে জোরে চলছে মোটরসাইকেল। অনেকের আবার হেলমেট নেই।’
প্রগতি সরণির সুবাস্তু নজরভ্যালির সামনে অনেক নারী-পুরুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। সেখানে ছিলেন অনেক গার্মেন্টকর্মী, বাসাবাড়িতে কাজ করেন এমন নারী ও রিকশাওয়ালাসহ অভাবী লোকজন। তারা জানান, ত্রাণের আশায় তারা বসে আছেন। কিন্তু বিকেল থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত তারা কোনো ত্রাণ পাননি।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে বিশ্বের ২০৫টি দেশ ও অঞ্চলে এখন পর্যন্ত ১১ লাখ ১৮ হাজারের মতো মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন প্রায় ৬০ হাজার। তবে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন দুই লাখ ২৮ হাজারের বেশি মানুষ।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয়েছে গত ৮ মার্চ। এরপর দিন দিন সংক্রমণ বেড়েছে। সবশেষ হিসাবে করোনায় বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ জন। মারা গেছেন আটজন। এছাড়া সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৩০ জন।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে এই ছুটি ১১ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
ছুটির সময়ে অফিস-আদালত থেকে গণপরিবহন, সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান, হাসপাতাল, জরুরি সেবা এই বন্ধের বাইরে থাকছে। জনগণকে ঘরে রাখার জন্য মোতায়েন রয়েছে সশস্ত্রবাহিনীও।
এইচএস/বিএ/জেআইএম