করোনা চিকিৎসা হচ্ছে সরকারি খরচে : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনার নমুনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে সব চিকিৎসা সরকারি খরচে করা হচ্ছে। এখানে যে পরীক্ষা করা হয়, যাদের পরীক্ষা করা হয় তাদের কাছ থেকে কোনো খরচ নেয়া হয় না। সব ধরনের খরচ সরকার বহন করছে এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় হচ্ছে।
শনিবার (১৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সমাপনী বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আসলে ভাইরাসটা মোকাবিলার পূর্বের কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন অনুসরণ করে, বিশেষ করে স্বাস্থ্য সেবাটা নিজস্ব কিছু চিন্তা ভাবনা দিয়েই আমরা পদক্ষেপ নিতে পেরেছি। আমরা স্কুল, কলেজ বন্ধ করে দেই। প্রত্যেকের যাতায়াত আমরা সীমিত করে দেই। আমরা ন্যাশনাল প্ল্যান ফর কোভিড-১৯ প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়ন করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সারাদেশে সব বিমানবন্দর এবং অন্য দেশ থেকে প্লেন আসা, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া স্থগিত করে দেই। সমুদ্র বন্দর, স্থল বন্দর এবং বিমান বন্দর এবং যেখান থেকে হোক বর্ডার থেকেও কোনো লোক আসলে তাদেরকে পরীক্ষা এবং যাদের এই রোগের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা আছে এবং যারাই আসবে তাদেরকে অন্তত দুই সপ্তাহ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নভাবে রাখা। অর্থাৎ কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করেছি। এ ক্ষেত্রে বর্ডার গার্ড কাজ করছে। আমাদের পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, সশস্ত্র বাহিনী সকলেই অত্যন্ত সক্রিয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য সেবাদানকারী ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী প্রত্যেকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তারা কাজ করে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত দেশে মোট ২১ হাজার ৩০৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তার মধ্যে দুই হাজার ১৪৪ জন করোনায় আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। যার মাঝে ৮৪ জন মারা গেছেন। দেশে এবং বিদেশে প্রচুর বাঙালি মারা গেছেন। আমি সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি, তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত যে ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি তাতে ৬৬ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন আর বাকীদের চিকিৎসা চলছে। আমরা প্রতিদিনই ২৪ ঘণ্টার একটা হিসেব নেই। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০৬ জন করোনায় আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ৯ জন মারা গেছে, আটজন সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা প্রত্যেকটা জায়গায় অর্থাৎ আমাদের স্থল বন্দর, নৌ বন্দর, বিমান বন্দর সব জায়গায় পরীক্ষা করার জন্য থার্মাল স্ক্যানার ও ইনফারেড থার্মোমিটারের মাধ্যমে পরীক্ষা শুরু করে দিয়েছি। প্রত্যেকটা জায়গায় কাজ করে যাচ্ছি। যে কমিটি করা হয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, সংশ্লিষ্ট বিদেশি সংস্থা, চিকিৎসক প্রতিনিধি, সকলকে নিয়েই একটা জাতীয় কমিটি করা হয়েছে। আর প্রত্যেকটা জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত কমিটি করে দেয়া হয়েছে। করোনা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করা- আমরা সে ব্যবস্থাগুলো নিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকেই এগিয়ে এসেছেন। যেমন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, ইউএসএইড, ইউকেএইডসহ জাতিসংঘ এবং দাতা সংস্থা বিভিন্নভাবেই পিপিই, পরীক্ষার কিট সরবরাহ করে যাচ্ছেন এবং সেগুলোই আমরা বিভিন্ন জায়গায় দিচ্ছি। এ পর্যন্ত ৯২ হাজার কিট সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার বিতরণ এবং ৭২ হাজারের মতো মজুত রাখা হয়েছে। এই কিট সংগ্রহ অব্যহত রয়েছে। অনেকেই আশঙ্কা করেন কিটের অভাব হবে। অভাব হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। কারণ ৭২ হাজারের মতো সংগ্রহে আছে। আমরা সেটা ব্যবহার করে যাচ্ছি। চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য হটলাইনের ব্যবস্থা করা আছে।
এইউএ/এএইচ/জেআইএম