ত্রাণ আত্মসাৎ : আরও ৩ ইউপি চেয়ারম্যান ও ৯ সদস্য বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:২০ পিএম, ১৯ এপ্রিল ২০২০

আত্মসাৎসহ ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগে আরও ১২ জনপ্রতিনিধিকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এদের মধ্যে তিনজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ও নয়জন ইউপি সদস্য। রোববার (১৯ এপ্রিল) স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এদের বরখাস্ত করে আলাদা আলাদা আদেশ জারি করা হয়েছে।

এর আগে গত ১২ এপ্রিল তিনজন ও ১৫ এপ্রিল নয়জন ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের জন্য এ পর্যন্ত মোট ২৪ জন জনপ্রতিনিধিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

রোববার সাময়িক বরখাস্ত চেয়ারম্যানরা হলেন- কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মখদুম কবীর তন্ময়, নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার অর্জুনপুর বরমহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সাত্তার এবং বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মাঝিহট্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা গোলাম হাফিজ সোহাগ।

সাময়িক বরখাস্তকৃত ইউপি সদস্যরা হলেন- নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার অর্জুনপুর-বড়মহাটি ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. রেজা, বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. জাকির হোসেন এবং আট নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. রোকনুজ্জামান, ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের আট নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আব্দুর রব পাটোয়ারী, নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শেখ মোশারেফ হোসেন এবং তিন নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য রনি বেগম, সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী উপজেলার খাসকাউলিয়া ইউনিয়নের নয় নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আল-আমিন চৌধুরী এবং সাত, আট ও নয় নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য মোছা. আছিয়া খাতুন।

এই চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অপরাধমূলক কার্যক্রম জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯’ এর ৩৪ (১) ধারা অনুযায়ী তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয় বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় সরকারের দেয়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাৎ, ভিজিডির চাল আত্মসাৎ, খাদ্যসহায়তা চাইতে আসা লোকজনকে মারধর, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে দেশের সংকটময় মুহূর্তে এলাকায় অনুপস্থিত থাকা, উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় অনুপস্থিত ইত্যাদি কারণে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

তাদের কেউ কেউ ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে আছেন এবং কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

একই সঙ্গে আলাদা আলাদা কারণ দর্শানো নোটিশে কেন তাদের চূড়ান্তভাবে পদ থেকে অপসারণ করা হবে না, তা জবাবপত্র প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হয়।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ইতোপূর্বে ত্রাণ বিতরণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার ঘোষণা দেন। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে অফিস আদেশ জারি করা হয়।

রোববার এক বার্তায় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম করা জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার কারণে বর্তমানে অনিয়মের ঘটনা কম পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

আরএমএম/এমএফ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।