করোনা মোকাবিলায় কৃষক ও ক্ষেতমজুর সমিতির ৮ দফা
করোনা পরিস্থিতি, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি ও অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় জাতীয় কৃষক ও ক্ষেতমজুর সমিতি আট দফা প্রস্তাব দিয়েছে। এ প্রস্তাব গুলো মেনে নেয়ার জন্য তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। রোববার এ বিজ্ঞপ্তিতে এই আট দফা প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি। তাদের প্রস্তাবগুলো হচ্ছে-
১) প্রত্যেক উপজেলা ও ইউনিয়ন হেলথ কমপ্লেক্সে করোনা পরীক্ষার জন্য জরুরি ব্যবস্থা ও সাধারণ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। এবং ‘সেনা মেডিকেল কোর’কে করোনা চিকিৎসার কাজে সম্পৃক্ত করতে হবে।
২) চাল নয়, ধান ক্রয় করতে হবে। ইরি-বোরো ধান ক্রয়, চাল উৎপাদন ও ধান-চাল সংগ্রহে বিদ্যমান কাঠামো কাজে লাগাতে হবে। যেমন চালকল ও চাতাল মালিকদের নির্দিষ্ট পার্সেন্টেস দিয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনায় কৃষকদের ধান ক্রয়, চাল উৎপাদন, সরকারি মজুতকরণ ব্যবস্থা কার্যকর করতে হব। সরকার নিজস্ব অর্থে সরাসরি কৃষকদের ধান ক্রয় করবেন। মাধ্যম থাকবে চাতাল মালিকরা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, ব্লক সুপারাইজাররা তদারকি করবেন। চাতাল মালিকরা চাল উৎপাদন করে সরকারি গুদামে পৌঁছে দেবেন। এতে কৃষকরা নিশ্চিতভাবে ধানের মূল্য পাবেন। ধানের আর্দ্রতা বেশি থাকলে চাতাল মালিকরা তাদের চাতালে ধান শুকিয়ে নেবেন। এর জন্য চাতাল মালিকদের একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে খরচ দিতে হবে। কৃষককে হয়রানি করা যাবে না।
৩) ক্ষেতমজুর, কর্মহীন, অসহায়, দরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য কার্ডের মাধ্যমে বিনামূল্যে পূর্ণ রেশন অথবা এক মাসিক মেয়াদে নগদ অর্থ প্রদান, মাঝারি কৃষক, মধ্যবিত্ত, ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য স্বল্প মূল্যে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৪) কৃষিঋণের সুদ মওকুফ, বিনা সুদে/ সহজ শর্তে কৃষি ঋণ প্রদান, ভাগ চাষিদের জন্য ব্যক্তি জামানতে ঋণ ও মৎস্য, হাস-মুরগি পালন, ডিম. দুগ্ধ ইত্যাদি কৃষিনির্ভর ও কৃষি সম্পর্কিত উৎপাদনে বিনা সুদের ঋণ দিতে হবে।
৫) ঋণ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ব্যাংকের অনিয়ম. অস্বচ্ছতা দুর্নীতির বিষয়ে কঠোর হতে হবে। ঋণ প্রদানে গ্রামের কৃষক প্রতিনিধি ও কৃষি বিভগের মাঠ কর্মীদের মতামত নিতে হবে। ঋণ গ্রহীতাদের নাম অনলাইনে সাধারণের দেখার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৬) কৃষি উৎপাদনে হারভেস্টার, ট্রাক্টরসহ অন্যান্য উপকরণ প্রদানে অনিয়ম দুনীতি বন্ধ করতে হবে। প্রকৃত কৃষক/কৃষি সমবায়/কৃষি সমিতি যাতে পেতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কৃষক প্রধিনিধি ও মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের সম্মতি থাকতে হবে। প্রাপকদের তালিকা অনলাইনে প্রকাশ করতে হবে।
৭) খাদ্য নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নে সব প্রকার দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও দলীয়করণ বন্ধ করতে হবে। ইতোমধ্যে জড়িত দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ত্রাণ তৎপরতার জন্য খাদ্য মজুত, পরিবহন ও বিতরণের দায়িত্ব সেনাবাহিনীর ওপর ন্যস্ত করতে হবে।
৮) এই মহাদুর্যোগ মোকাবিলায় জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা ও সর্বদলীয় জাতীয় সমন্বয় কমিটি গড়ে তোলার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
এফএইচএস/এমএফ/এমকেএইচ