করোনায় আরও ৯ জনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ৪৩৪
মহামারি করোনাভাইরাস দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে ১১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হিসেবে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৪৩৪ জন। এতে করোনায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজার ৩৮২ জন।
মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ১২৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে দুই হাজার ৯৭৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৯ হাজার ৫৭৮টি। নতুন যে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তার মধ্যে আরও ৪৩৪ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৩৮২-এ। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও নয়জন। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১১০ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও দুজন। ফলে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা ৮৭।
নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ ও চারজন নারী। বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব তিনজন, পঞ্চাশোর্ধ্ব তিনজন এবং চল্লিশোর্ধ্ব তিনজন।
বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ৮৯ জনকে। বর্তমানে মোট আইসোলেশনে আছেন ৭৬৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুজন। এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৫৭৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টোইনে নেয়া হয়েছে ৪ হাজার ১৬৮ জনকে। এ পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে এক লাখ ৫৩ হাজার ৭৯৪ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে এক হাজার ৪২৪ জনকে। এ পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে সাত হাজার ১২ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে ৫ হাজার ৫৯২ জনকে এবং এ পর্যন্ত নেয়া হয়েছে এক লাখ ৬০ হাজার ৮০৬ জনকে। বর্তমানে মোট হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৭৭ হাজার ৯৩১ জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারন্টাইনে আছেন ৫ হাজার ৮৭৪ জন। মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৮৩ হাজার ৮০২ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ১৯২ জন। যারা কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন তারা সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারবেন, তবে তাদের এ মুহূর্তে ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।
বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে। চীন পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও এখন ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের প্রায় ২৫ লাখ। এক লাখ ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা। তবে সাড়ে ছয় লক্ষাধিক রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। সবশেষ হিসাবে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা তিন হাজার ৩৮২। মারা গেছেন ১১০ জন। সুস্থ হয়েছেন ৮৭ জন।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে; যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব ও পুলিশ।
এমইউ/এইচএ/এমকেএইচ/জেআইএম